sura bakara ses 2 ayat bangla (আয়াত ২৫৫-২৫৭)

মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার সেরা উপায়সমূহসূরা বাকারার শেষ দুই ও তিন আয়াত এবং আয়াতের ফজিলত সম্পর্কে জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আপনি কি জানেন যে, সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (আয়াত ২৫৫-২৫৭) শুধুমাত্র ধর্মীয় প্রার্থনার জন্য নয়, বরং 
sura-bakara-ses-2-ayat-bangla-(আয়াত-২৫৫-২৫৭)
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সুরক্ষা এবং শান্তি পাওয়ার জন্য এই আয়াতগুলো একটি শক্তিশালী অস্ত্র? এই আয়াতগুলো কিভাবে আপনার দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন আনতে পারে? হাদিসে বর্ণিত হয়েছে যে, যে কেউ নিয়মিত এই আয়াতগুলো পাঠ করে, সে আল্লাহর সুরক্ষায় থাকে এবং শয়তানের বিপদ থেকে মুক্তি পায়।

আসুন, এই আয়াতগুলোর চিরন্তন শিক্ষাগুলো সম্পর্কে আরও জানি এবং দেখি কিভাবে আমরা আমাদের জীবনে এই মহান বার্তাগুলোকে প্রয়োগ করতে পারি! তা বিস্তারিতভাবে এখানে পড়ুন আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই আয়াতের পূর্ণতা এবং বরকত অর্জনে সহায়ক হোন, আমিন!
পোস্ট সূচিপত্রঃ sura bakara ses 2 ayat bangla (আয়াত ২৫৫-২৫৭)
মর্ডান আইটি

পরিচিতি-(আয়াত ২৫৫-২৫৭)

সূরা বাকারার শেষ দুই ও তিন আয়াত ইসলামী ধর্মবিশ্বাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আয়াত সমূহের মধ্যে সবচেয়ে অন্যতম। কেননা সকল মুসলিম উম্মাহর জন্য, এগুলো দৈনিক রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করা একটি গুরুত্বপূর্ণ আবশ্যক অনুশীলন। এই পোস্টে আমরা সূরা বাকারার শেষ দুই ও তিন আয়াত এবং আয়াতের ফজিলত, তাৎপর্য এবং আমাদের জীবনে এর প্রভাব নিয়ে আলোচনা করবো।

সূরা বাকারার শেষ দুই ও তিন আয়াতের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা

সূরা বাকারার শেষ দুই বা তিন আয়াত, অর্থাৎ (আয়াতুল কুরসি) আয়াত ২৫৫ এবং ২৫৬-২৫৭, ইসলামি বিশ্বাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং পরিচিত আয়াত হিসাবে খ্যাতিসম্পন্ন। এই আয়াতগুলো প্রত্যেক মুসলিম উম্মার আমল করা উচিত।

আয়াতুল কুরসিতে আল্লাহর অদ্বিতীয় ক্ষমতা, জ্ঞান ও কর্তৃত্বের উল্লেখ রয়েছে। এটি মুসলিমদের জন্য এমন একটি আস্থাভাজন একটি আশ্রয়স্থল, যা দুশ্চিন্তা ও ভয় দূর করতে সাহায্য করে। হাদিসে উল্লেখিত হয়েছে যে, এই আয়াতটি পড়লে আল্লাহর নিরাপত্তা প্রাপ্ত হয়।


দ্বিতীয় ও তৃতীয় আয়াতে আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার উল্লেখ রয়েছে, যা আমাদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। এরা নিশ্চিত করে যে, আল্লাহ তাওবা গ্রহণ করেন এবং তাঁর বান্দাদের প্রতি দয়ালু।

অতএব, এই আয়াতগুলো নিয়মিত পাঠ করা আমাদের জীবনে প্রশান্তি এবং সুরক্ষা নিয়ে আসে, আর এগুলো ইসলামের মৌলিক শিক্ষা ও আকিদার প্রতিফলন ঘটায়।
sura bakara ses 2 ayat bangla
সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত, আয়াত ২৫৫ (আয়াতুল কুরসি) এবং আয়াত ২৫৬-২৫৭, ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

আয়াত ২৫৫ (আয়াতুল কুরসি):

এটি আল্লাহর অদ্বিতীয়ত্ব, সর্বশক্তিমানত্ব এবং জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে মনে প্রাণে বিশ্বাস এবং স্বীকারোক্তি ফুটে উঠেছে। এই আয়াতে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, এবং তিনি চিরন্তন, চিরকালীন। এটি মুমিনদেরকে বিশ্বাসের সাথে আল্লাহর সুরক্ষা ও রহমতের আশ্বাস দেয় এবং দুশ্চিন্তা ও ভয় থেকে সকল মুমিনদের আল্লাহতালা মুক্তি দান করে।

আয়াত ২৫৬-২৫৭:

এই আয়াতগুলো প্রধানত আল্লাহর ক্ষমা এবং দয়ালুতার এবং তার রহমতের আলোকপাত বর্ণনা করে। এতে বলা হয়েছে যে, ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে কোন জবরদস্তি নেই এবং যারা আল্লাহর পথে চলে, তাদের জন্য আল্লাহর রহমতের দয়ালুতা ও হিদায়াত রয়েছে। যার ফলে এই আয়াতটি মুমিনদেরকে নিশ্চিত করে যে, আল্লাহ তাদেরকে নিরাপত্তা ও সুরক্ষায় রাখবেন।


এই তিনটি আয়াত ইসলামিক শিক্ষা ও বিশ্বাসের মূল ভিত্তি, যা মুসলিমদের জীবনে সান্ত্বনা এবং নিরাপত্তা নিয়ে আসে। আয়াতগুলোকে প্রতিদিনের জীবনে পাঠ করা ও তাদের শিক্ষা গ্রহণ করা মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

sura bakara ses 2 ayat bangla

আয়াত ২৫৫ (আয়াতুল কুরসি)
আরবিঃ
اللَّهُ لَا إِلَٰهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ ۚ لَا تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلَا نَوْمٌ ۚ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ ۗ مَن ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِندَهُ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۚ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ ۗ وَلَا يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلَّا بِمَا شَاءَ ۚ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ ۗ وَلَا يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا ۚ وَهُوَ الْعَلِيُّ الْكَبِيرُ

বাংলা অনুবাদ: “আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ বা ইলাহ নেই; তিনি চিরঞ্জীব,সর্বশক্তিমান,অদ্বিতীয় এবং অটল। তার নীন্দ্রা বা ঘুম নেই বা তাকে এগুলো স্পর্শ করতে পারে না। আসমান জমিন থেকে শুরু করে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সকল কিছু তাঁরই এবং তিনিই সবকিছুর মালিক। 


কে আছে, যিনি তাঁর সামনে অনুমতি ছাড়া শাফা'ত করতে পারে? তিনি সামনে ও পেছনে যা কিছু রয়েছে, তা সবকিছুই জানেন এবং কোন ব্যক্তি চাইলে তারা তাঁর জ্ঞানের কিছুই ধারণ করতে পারবে না। তাঁর নিয়ামত জমিন থেকে শুরু করে আকাশসমূহ এবং গোটা পৃথিবীকে পরিবেষ্টিত করেছে। এবং তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল এবং মহান।”

ইংরেজি অনুবাদ: “There is no god or god but Allah; He is Eternal, Almighty, Unique and Immovable. He has neither slumber nor sleep nor can he be touched by them. From the heavens and the earth to the heavens and the earth, everything belongs to Him and He owns everything. 

Who is there, who can intercede before him without permission? He knows all that is before and behind, and no one will be able to grasp anything of His knowledge. His blessings cover the earth from the earth to the heavens and the whole earth. And He is Mighty, Oft-Forgiving, and Great."

আয়াত ২৫৬:
لَا إِكْرَاهَ فِي الدِّينِ ۚ قَد تَّبَيَّنَ الرُّشْدُ مِنَ الْغَيِّ ۚ فَمَن يَكْفُرْ بِالطَّاغُوتِ وَيُؤْمِن بِاللَّهِ فَقَدِ اسْتَمْسَكَ بِالْعُرْوَةِ الْوُثْقَىٰ لَا انفِصَامَ لَهَا ۗ وَاللَّهُ سَمِيعٌ عَلِيمٌ

বাংলা অনুবাদ: “ইসলাম ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই। কেননা শান্তিপূর্ণ এ ধর্মের মাধ্যমে সঠিক পথ ও বিভ্রান্তি পরিষ্কার হয়ে গেছে, অন্ধকার শেষে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। অতএব, যে ব্যক্তি সকল নিয়ামত এবং তার ক্ষমতা সম্পর্কে কোন দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই মনে প্রাণে স্বীকার করে এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, সে একটি দৃঢ় ধারণার সাথে আবদ্ধ হলো, যার কোনো বিচ্ছিন্নতা নেই। আল্লাহ সবকিছুর শ্রবণকারী, তিনি সবকিছু শুনেন এবং সবকিছুর জানেন এবং দেখেন।”

ইংরেজি অনুবাদ: “There is no compulsion in Islam. Because through this peaceful religion the right path and confusion are cleared, the darkness is over and the new horizon has begun. Therefore, a person who acknowledges and believes in Allah without any doubts about all the blessings and His powers, is bound to a firm idea, which has no separation. Allah is All-Hearing, All-Hearing and All-Knowing and All-Seeing.”

আয়াত ২৫৭ আরবি:
اللَّهُ وَلِيُّ الَّذِينَ آمَنُوا ۖ يُخْرِجُهُم مِّنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ ۖ وَالَّذِينَ كَفَرُوا أَوْلِيَاؤُهُمُ الطَّاغُوتُ ۖ يُخْرِجُونَهُم مِّنَ النُّورِ إِلَى الظُّلُمَاتِ ۚ أُو۟لَـٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ

বাংলা অনুবাদ: “আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের সহযোগী, তিনি সব সময়ই তার গোলাম বা বান্দাদের তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোতে বের করে আনেন এবং সফল ধরনের বিপদ আপদ থেকে তার রহমতের মাধ্যমে সাহায্য সহযোগিতা করেন। আর যারা আল্লাহতালার ক্ষমতা এবং তার দেখানো পথ থেকে সরে যাই সেই সকল ব্যক্তিদেরকে আলো থেকে অন্ধকারে বের করে দেয়। তারা হল আগুনের সঙ্গী বা জাহান্নামী তারা সেখানে চিরকাল থাকবে।”

ইংরেজি অনুবাদ: "Allah Ta'ala is the helper of the believers, He always brings His servants out of darkness into the light and helps them through His mercy from successful calamities." And those who turn away from the power of Allah and the path shown by Him, He casts them out of the light into darkness. They are companions of the Fire or Hell, they will remain there forever.”

আয়াতুল কুরসির ফজিলত হাদিসের বর্ণনায়

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাতে আয়াতুল কুরসি (সূরা বাকারার আয়াত ২৫৫) পড়ে, তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ফেরেশতার মাধ্যমে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে এবং সকাল পর্যন্ত তাকে বিভিন্ন মানুষ এবং জিন শয়তান থেকে রক্ষা করা হয়। (সুনানে ইবনে মাজাহ) (আল-জামে আল-সাহিহ)
sura-bakara-ses-2-ayat-bangla-(আয়াত-২৫৫-২৫৭)


আরেকটি হাদিসে উল্লেখ রয়েছে:
"আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হয়েছে , রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (২৫৬-২৫৭) রাতে পড়ে, সে রাতে তার জন্য যথেষ্ট হবে অর্থাৎ সে রাতে যদি সে এশার নামাজ পড়ে এই সূরা বাকারার আয়াতগুলো পড়ে ঘুমায় আর সে রাতে যদি তার মৃত্যু হয় তাহলে তার ঈমানী মৃত্যু হবে। এবং আল্লাহ তা'আলা তাকে রাতের সকল ধরনের বিপদ আপদ থেকে রক্ষা করবে।
(বুখারি ও মুসলিম)

এগুলো থেকে বোঝা যায়, সূরা বাকারার শেষ দুই ও তিন আয়াতের পড়া মুমিনদের জন্য অনেক ফজিলত ও নিরাপত্তা নিয়ে আসে। নিয়মিত এসব আয়াতের পাঠ মুসলিমদের আধ্যাত্মিক ও মানসিক শান্তি ফিরে আসবে এবং বিভিন্ন বিপদ আপদ থেকে রক্ষা পাবে।

হাদিসের বর্ণনায় এই আয়াত পড়ার ফলাফল

আয়াতুল কুরসি শেষ তিন আয়াত (২৫৫-২৫৬-২৫৭) শিক্ষা: এই তিন আয়াত নিয়মিত আমল করার ফলে আল্লাহতালা ওই বান্দার উপর বেশ কিছু রহমত দান করেন। যেগুলো প্রত্যেক মুসলিম উম্মার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

  • ঈমানের শক্তি বৃদ্ধি: ঈমানের মাত্রা বৃদ্ধি করে। একজন মুসলিম যখন প্রতিদিন এই আয়াতগুলো পড়েন, তখন তিনি আল্লাহর গুণাবলী ও মহিমা সম্পর্কে আরও বেশি জানতে পারেন, যা তাঁর ঈমানকে শক্তিশালী করে।
  • শয়তানের বিপদ থেকে রক্ষা: এই আয়াতগুলো শয়তানের প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি শক্তিশালী উপায়। কেননা বিশেষ করে রাতের সময়, সকল শয়তানের প্রভাব বেশি থাকে।
  • বিশ্বাসের গুরুত্ব: হাদিসগুলোর মাধ্যমে আল্লাহর উপর বিশ্বাস এবং তাঁর নিরাপত্তার আশ্বাস পাওয়ার গুরুত্ব প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।
  • নির্ধারিত পাঠ: ইসলাম ধর্মে নির্দিষ্ট আয়াত ও সূরা পাঠের গুরুত্বকে তুলে ধরা হয়েছে, যা মুসলিমদের আধ্যাত্মিক জীবনকে সমৃদ্ধ করে।
রাতে ঘুমানোর আগে এই আয়াতগুলো পাঠ করলে আল্লাহ আমাদের কষ্ট, বিপদ এবং অন্য কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি থেকে সুরক্ষা দেন। এছাড়া এটি আমাদের দেহ, মন, এবং আত্মার প্রশান্তির জন্য কার্যকরী দোয়া। প্রতিদিন নিয়মিত এই আয়াতগুলো পড়া আল্লাহর রহমত অর্জনে সহায়ক হতে পারে এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আল্লাহর সহায়তা ও সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।

আয়াতগুলোর গভীর তাফসির বা ব্যাখ্যা।

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত (আয়াত ২৮৫ ও ২৮৬) ইসলামের শিক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এই আয়াতগুলোকে মুসলমানদের জন্য সান্ত্বনা ও দোয়া হিসেবে গণ্য করা হয়। এদের গভীর তাফসির বা ব্যাখ্যা তুলে ধরা হলো:


তাফসির আয়াত ২৮৫
ঈমান: ২৮৫ আয়াতে বলা হয়েছে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং মুমিনগণ আল্লাহর পাঠানো প্রতিটি জিনিস এবং ইসলামের পাঁচটি মূল বিষয়বস্তুর ওপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করেছেন। তাদের ঈমান শুধু আল্লাহর উপর নয়, বরং ফেরেশতাগণ, কিতাবসমূহ, এবং নবীদের উপরও। আর এ পাঁচটি বিষয়ে ঈমান আনা প্রত্যেকটি মুমিন ব্যক্তির ওপর ফরজ।

পারস্পরিক সমতা: সকল মুসলিম ব্যক্তি কোন নবীদের একে অপরের মধ্যে পার্থক্য করেন না। অর্থাৎ সব নবীই আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত, এবং তারা সবাই আল্লাহর দিন এবং তার বাণী ইসলাম প্রচার করে এসেছেন।

বিনয় ও আনুগত্য: " অন্তরে বিশ্বাস করা এবং তা অনুযায়ী আমল করা"—এই কথাটি দ্বারা মুমিনদের বিনয় এবং পূর্ণ আনুগত্য প্রকাশ পায়। এতে বোঝা যায়, তারা আল্লাহর আদেশ ও নির্দেশকে প্রশ্ন না করে মেনে নেন এবং সৎপথে চলার জন্য তাঁরই সাহায্য প্রার্থনা করেন।

তাফসির আয়াত ২৮৬
সহনশীলতা ও ন্যায্যতা: আল্লাহ বলেন যে তিনি কাউকে তার সামর্থ্যের বাইরে কোনো কাজ চাপিয়ে দেন না। এই আয়াতটি মানবজাতির প্রতি আল্লাহর রহমতের এক বড় উদাহরণ। এটা বোঝায় যে আল্লাহ আমাদের ক্ষমতার কথা জানেন এবং আমাদের সামর্থ্যের বাইরে কিছুই দায়িত্বে দেন না।


তওবা ও ক্ষমা: এই আয়াতে আরো বলা হয়েছে, সকল পাপ এবং ভুলত্রুটি থেকে আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা চাওয়া হয়। এ থেকে বোঝা যায়, আল্লাহতালার কাছে ক্ষমা চাইলে আত্মা এবং মনের তৃপ্তি এবং শান্তি ফিরে আসে।

পূর্ববর্তী জাতির বোঝা: আল্লাহর কাছে এই প্রার্থনা করা হয়েছে, যেন তিনি আমাদের উপর সেই কষ্ট না দেন যা পূর্ববর্তী জাতির উপর দিয়েছিলেন। এটাও আল্লাহর রহমতের একটি দিক যে তিনি আমাদের উপর সেই কঠোরতা আরোপ করেন না। কেননা আমরা শেষ নবীর উম্মত।


সাহায্য ও সুরক্ষা প্রার্থনা: এই আয়াতের শেষ অংশে আল্লাহর সাহায্য চাওয়া হয়েছে, যাতে তিনি অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে মুমিনদের শক্তি প্রদান করেন এবং রক্ষা করেন। এটি মুসলিমদের শক্তি ও সহনশীলতার জন্য আল্লাহর উপর নির্ভরশীলতার এক চমৎকার উদাহরণ।

পাঠকদের জন্য লেখক এর পরামর্শ:

সুরা বাকারার এই শেষ দুই আয়াত এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে এটি রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম সকল মুসলিম ব্যক্তিদের পড়তে উৎসাহিত করেছেন। কিছু পরামর্শ হলো
  • এই আয়াতসমূহ নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা
  • আয়াতের অর্থ এবং মর্মার্থ উপলব্ধি করা
  • বিশ্বাস ও নির্ভরতার শক্তি বৃদ্ধি করা
  • আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও সাহায্যের জন্য প্রার্থনা করা
  • এবং সর্বশেষ পরিবারকে এই আয়াতগুলো শিখতে উৎসাহিত করা

লেখক এর শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক, আজই সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত আপনার জীবনের অংশ করে তুলুন। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এই আয়াতগুলো পাঠ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন এবং আল্লাহর রহমত ও সুরক্ষা লাভ করুন। এই আয়াতগুলো নিয়ে আপনার উপলব্ধি এবং অভিজ্ঞতা আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন, আপনারা কি এই আয়াতগুলো পড়েন? মন্তব্যে জানাবেন যাতে আরও অনেকে এর উপকারিতা সম্পর্কে জানতে পারে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর রহমত ও ক্ষমার ছায়ায় রাখুন, আমিন!

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মর্ডান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url