ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম থেকে টাকা ইনকাম করা পর্যন্ত
মাসে ৫০ হাজার টাকা আয় করার উপায়আপনি কি YouTube চ্যানেল খুলতে চান? কিন্তু জানেন না কোথা থেকে শুরু করবেন? তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে! কেননা সহজ ধাপে ধাপে নির্দেশিকা সহ YouTube চ্যানেল খোলার সমস্ত প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
সফল YouTuber হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করুন, বর্তমান সময়ে অধিকাংশ ব্যক্তি কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করে এখান থেকে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করে যাচ্ছে। এজন্য আপনিও তাদের মত একজন হতে আর দেরি করবেন না—এখনই সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন এবং শুরু করুন!
ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি লাগে? থেকে শুরু করে একদম টাকা ইনকাম করা পর্যন্ত সম্পূর্ণ স্টেপ বাই স্টেপ গাইড
পোস্ট সূচীপত্রঃইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম থেকে টাকা ইনকাম করা পর্যন্ত
মডার্ন আইটি
মূলভাব-ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
সম্পূর্ণ পোস্টটি এক নজরে দেখে নিন। আজকের পোস্টটিতে যে সকল বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি লাগবে? ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম স্টেপ-বাই-স্টেপ গাইড।ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর কি করব? ইউটিউব চ্যানেল কাস্টমাইজ করবেন যেভাবে। YouTube চ্যানেল খুব দ্রুত বড় করার অতিরিক্ত উপায় সমূহ। ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কত খরচ হয়? ইউটিউব চ্যানেল কেন ভেরিফাই করবেন ভেরিফাই করার সুবিধা।
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করার নিয়ম। ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার উপায় সমূহ জানতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও কিভাবে বানাবো? থাম্বেল তৈরি করার পূর্বে যে সকল বিষয়ে খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরী। ইউটিউব চ্যানেলের জন্য থাম্বনেইল যেভাবে বানাবেন? ইউটিউব চ্যানেল গ্রো করার উপায়। এক কথায় বলা যায় একদম শুরু থেকে শেষ, ইনকাম হওয়া পর্যন্ত সম্পূর্ণ গাইড লাইন রয়েছে এই পোস্টে
ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কি কি লাগবে?
সাধারণত ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য খুব বেশি জিনিসের প্রয়োজন পড়ে না। তবে নির্দিষ্টভাবে অবশ্যই কিছু জিনিস রয়েছে যেগুলো ছাড়া আপনি কখনোই একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন না। এজন্য ইউটিউব চ্যানেল খোলার পূর্বে অবশ্যই জেনে নিন যে সকল জিনিস আপনার আছে কিনা। ইউটিউব চ্যানেল খুলতে নিম্নলিখিত কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস লাগে
১। গুগল অ্যাকাউন্ট
ইউটিউবে চ্যানেল খোলার জন্য প্রথমে একটি গুগল অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন। কেননা youtube হচ্ছে গুগলের আওতাধীন এজন্য অবশ্যই চ্যানেল ক্রিয়েট করার পূর্বে আপনার একটি গুগল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। আপনার যদি ইতিমধ্যে কোন গুগল অ্যাকাউন্ট না থাকে, তাহলে একটি গুগল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
২। ইন্টারনেট সংযোগ
একটি স্থিতিশীল ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন ভিডিও আপলোড ও ম্যানেজ করার জন্য। চ্যানেল তৈরি করতে এবং ভিডিও আপলোড করার জন্য অবশ্যই একটি ইন্টারনেট সংযোগ প্রয়োজন পড়বে।
৩। ভিডিও কন্টেন্ট
আপনার চ্যানেলের জন্য ভিডিও তৈরি করতে হবে। এটি বিভিন্ন ধরনের ভিডিও হতে পারি এটি হতে পারে কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে টিউটোরিয়াল, গেমপ্লে, ব্লগিং, মিউজিক বা অন্যান্য যেকোনো কন্টেন্ট যা আপনি তৈরি করতে চান।
৪। ভিডিও তৈরির সরঞ্জাম
আপনার কাছে একটি স্মার্টফোন, ক্যামেরা বা কম্পিউটার থাকলেই আপনি ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এজন্য ভিডিও তৈরি করতে আলোচিত বিষয় গুলো আপনার প্রয়োজন পড়বে।
৪। ভিডিও রেকর্ডিং ডিভাইস
আপনি স্মার্টফোন, ক্যামেরা বা ওয়েবক্যাম দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করতে পারেন। ভালো মানের ভিডিওর জন্য একটি ভালো ক্যামেরা এবং মাইক্রোফোন থাকা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের ফোন রয়েছে যেগুলোতে অনেক ভালো মানের ক্যামেরা সংযুক্ত রয়েছে সেই সকল ফোন বা নির্দিষ্টভাবে ভিডিও করার জন্য ক্যামেরার প্রয়োজন পড়বে।
৫। এডিটিং সফটওয়্যার
আপনার ভিডিও এডিট করতে একটি এডিটিং সফটওয়্যার প্রয়োজন। ফ্রি এডিটিং টুল যেমন DaVinci Resolve, Shotcut, বা পেইড টুল যেমন Adobe Premiere Pro, Final Cut Pro ব্যবহার করতে পারেন।
৬। ইউটিউব চ্যানেলের লোগো ও ব্যানার
চ্যানেলের জন্য একটি প্রফেশনাল লোগো এবং কাস্টমাইজড ব্যানার তৈরি করা যেতে পারে। Canva, Photoshop বা অন্যান্য গ্রাফিক্স ডিজাইন টুল দিয়ে সহজেই এগুলো বানানো যায়।
৭। চ্যানেলের পরিকল্পনা ও বিষয়বস্তু
কী ধরনের ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করবেন এবং কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে ফোকাস করবেন তা নির্ধারণ করা জরুরি। আপনি একাধিক বিষয়ে ভিডিও করতে পারেন তবে একটি নিক তৈরি করা ভালো।
আরো পড়ুনঃ দ্রুত পেটের গ্যাস কমানোর উপায় জেনে নিন।
৮। ভালো ভিডিও থাম্বনেইল
প্রতিটি ভিডিওর জন্য আকর্ষণীয় থাম্বনেইল ডিজাইন করতে হবে, কারণ এটি ভিডিওর ভিউ বাড়াতে সাহায্য করে।
এই জিনিসগুলো থাকলে আপনি সহজেই ইউটিউব চ্যানেল খুলতে এবং পরিচালনা করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেল খুলতে খরচ কম হলেও সফল হতে হলে আপনাকে অনেক পরিশ্রম করতে হবে।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম স্টেপ-বাই-স্টেপ গাইড
বর্তমান সময়ে এসে youtube চ্যানেল খোলা অত্যন্ত সহজ হয়ে এসেছে। নিজের ক্রিয়েটিভিটি মতামত এবং একমাত্র ভিডিওর মাধ্যমে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করার জন্য অন্যতম একটি প্ল্যাটফর্ম হচ্ছে ইউটিউব।
আসুন জেনে নিই কীভাবে সেই প্ল্যাটফর্মে একটি ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করে নিজেকে স্বাবলম্বী করবেন। তাহলে চলুন কিভাবে আপনি নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারেন।
ধাপ ১: YouTube অ্যাকাউন্ট তৈরি
গুগল অ্যাকাউন্টঃ YouTube চ্যানেল খুলতে হলে প্রথমে একটি Google অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন। আপনার ফোনে যদি কোন জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকে তাহলে অবশ্যই একটি গুগল একাউন্ট রয়েছে। যদি না থাকে তাহলে জিমেইল অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন তাহলে একটি গুগল অ্যাকাউন্ট ও তৈরি হয়ে যাবে। আপনার যদি ইতিমধ্যে Google অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে সেটি দিয়ে সাইন ইন করতে হবে।
গুগল অ্যাকাউন্ট খুলুন
প্রথমে Google Sign Up লিংকে ক্লিক করুন।
আপনার নাম, ইমেইল, পাসওয়ার্ড, এবং অন্যান্য তথ্য দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
ধাপ ২ঃ YouTube এ লগইন
Google অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে YouTube এ যান। এবং পরবর্তীতে youtube এর ডান পাশে থাকা উপরের দিকে তাকালে দেখতে পাবেন উপরের ডান পাশে ঠিক এমন একটি ইন্টারফেস শো করবে।
উপরের ডান পাশে থাকা প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন এবং "Sign in" বাটনে ক্লিক করে Google অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করুন।
আরো পড়ুনঃ যৌনশক্তি বৃদ্ধির ঘরোয়া উপায় জেনে নিন।
ধাপ ৩ঃ চ্যানেল তৈরি
YouTube এ লগইন হওয়ার পর, প্রথমে উপরে থাকা প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করুন। এবং পরবর্তীতে ড্রপডাউন থেকে "Create a channel" অপশন নির্বাচন করুন।
এখানে আপনার চ্যানেলের নাম, বিবরণ এবং প্রোফাইল ছবি যোগ করার সুযোগ পাবেন। চ্যানেলের নামটি এমন রাখুন যাতে আপনার বিষয়বস্তু সহজেই বুঝা যায়।
Create Channel বাটনে ক্লিক করে চ্যানেল তৈরি করুন।
ধাপ ৪ঃ চ্যানেল কাস্টমাইজেশন
চতুর্থ ধাপে এসে চ্যানেল ক্রিয়েট করা শেষ হয়ে গেলে। এখন চ্যানেল সেটিং এ গিয়ে আপনার চ্যানেলটিকে কাস্টমাইজেশন করতে হবে। প্রোফাইল আইকনে ক্লিক করে YouTube Studio অপশনে যান। এখানে আপনি চ্যানেলের ড্যাসবোর্ডে যাবেন যেখানে ভিডিও আপলোড, চ্যানেল কাস্টমাইজেশন, এবং অন্যান্য ফিচার ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
প্রোফাইল ছবি এবং ব্যানার
চ্যানেলকে আকর্ষণীয় করতে প্রোফাইল ছবি এবং ব্যানার যোগ করুন। চিত্রের মাপ যথাযথ হওয়া উচিত, যেমনঃ
প্রোফাইল ছবিঃ 800x800 পিক্সেল।
ব্যানার ছবিঃ 2560x1440 পিক্সেল।
ধাপ ৫: প্রথম ভিডিও আপলোড
ভিডিও আপলোড: YouTube Studio তে গিয়ে উপরের ডান পাশে থাকা "Create" বাটনে ক্লিক করুন, এবং "Upload video" নির্বাচন করুন।
বিষয়বস্তু তৈরিঃ আপনার প্রথম ভিডিওটি নির্বাচন করুন এবং সেটির শিরোনাম, বিবরণ, এবং ট্যাগ যোগ করুন যাতে দর্শকরা সহজেই ভিডিওটি খুঁজে পান।
থাম্বনেইল যোগ করাঃ আকর্ষণীয় একটি কাস্টম থাম্বনেইল তৈরি করুন, কারণ এটি ভিডিওর দর্শক আকর্ষণ বাড়ায়।
ধাপ ৬ঃ চ্যানেলের উন্নতি এবং প্রচার
- কন্টেন্ট শেয়ার করাঃ আপনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করুন, যেমন Facebook, Instagram, Twitter ইত্যাদি।
- SEOঃ ভিডিওর টাইটেল, ট্যাগ, এবং বিবরণ এমনভাবে তৈরি করুন যাতে এটি সার্চ রেজাল্টে ভালোভাবে আসে।
- Audience Interaction দর্শকদের কমেন্টের উত্তর দিন এবং নিয়মিত ভিডিও পোস্ট করুন।
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর কি করব?
ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর কি করব এই প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অর্থাৎ youtube চ্যানেল খোলার পর থেকেই কিন্তু সংগ্রাম আর পরিশ্রম শুরু। আর এই সংগ্রাম আর পরিশ্রমটি যদি হয় সঠিক উপায়ে তাহলে অবশ্যই আপনিও অন্যান্যদের মতো এই চ্যানেল থেকে মাসে লক্ষাধিক টাকা পর্যন্ত উপার্জন করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর সফলভাবে চালানোর জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রয়েছে। এখানে কিছু মূল বিষয় তুলে ধরা হলো
১। চ্যানেল কাস্টমাইজেশন
- প্রোফাইল পিকচারঃ একটি আকর্ষণীয় এবং চিনতে পারার মতো প্রোফাইল পিকচার আপলোড করবেন।
- ব্যানার (চ্যানেল আর্ট) চ্যানেলের জন্য একটি ব্যানার ডিজাইন করবেন। এটি চ্যানেলের থিম ও বিষয়বস্তু প্রতিফলিত করতে হবে।
- চ্যানেল বিবরণঃ চ্যানেলের সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ লিখবেন, যেখানে আপনি কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করবে এবং দর্শকরা কেন সাবস্ক্রাইব করবে তা ব্যাখ্যা করবেন।
২। কন্টেন্ট প্ল্যানিং
- ভিডিও কনটেন্টঃ ভিডিওগুলির পরিকল্পনা করবেন, যেমন টিউটোরিয়াল, রিভিউ, বিনোদন ইত্যাদি।
- কন্টেন্ট ক্যালেন্ডারঃ একটি কন্টেন্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করবেন যাতে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে পারেন।
৩। ভিডিও তৈরি ও আপলোড
- ভিডিও বানানোঃ উচ্চমানের ভিডিও তৈরি করবেন এবং এডিটিং করে সুন্দরভাবে প্রস্তুত করতে হবে।
- ভিডিও আপলোডঃ ভিডিও আপলোডের সময় আকর্ষণীয় টাইটেল, ডেসক্রিপশন, এবং থাম্বনেইল যোগ করবেন।
৪। সার্চ অপটিমাইজেশন (SEO)
- ট্যাগ এবং কিওয়ার্ডঃ ভিডিওর সাথে সঠিক ট্যাগ এবং কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন যাতে ভিডিও সার্চ রেজাল্টে ভালোভাবে আসে।
- ডেসক্রিপশনঃ বিস্তারিত ও কিওয়ার্ড-সমৃদ্ধ ডেসক্রিপশন লিখবেন।
৫। অডিয়েন্সের সাথে যোগাযোগ
- কমেন্টে উত্তরঃ দর্শকদের মন্তব্যের জবাব দিবেন এবং তাদের সাথে যোগাযোগ বজায় রাখবেন।
- ফিডব্যাক গ্রহণঃ দর্শকদের ফিডব্যাক এবং পরামর্শ শুনবেন এবং প্রয়োজনে চ্যানেলকে উন্নত করবেন।
৬। প্রচার এবং মার্কেটিং
- সোশ্যাল মিডিয়াঃ আপনার ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন এবং বন্ধুদের সাথে প্রচার করবেন।
- ক্রস-প্ল্যাটফর্ম প্রমোশনঃ অন্য ইউটিউব চ্যানেলগুলোর সাথে সহযোগিতা করবেন এবং পারস্পরিক প্রচার ঙ্করবেন।
৭। বিশ্লেষণ এবং উন্নয়ন
- অ্যানালিটিক্সঃ ইউটিউব অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে ভিডিওর পারফরম্যান্স ট্র্যাক করবেন।
- প্রবণতা ও পরিবর্তনঃ আপনার কন্টেন্টের পারফরম্যান্স অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও উন্নয়ন করবেন।
৮। নিয়মিত আপডেট
- নতুন কন্টেন্ট আপলোডঃ নিয়মিত নতুন কন্টেন্ট আপলোড করতে থাকবেন যাতে দর্শকরা চ্যানেলের সাথে যুক্ত থাকে।
- ইনোভেশনঃ নতুন ট্রেন্ড এবং আইডিয়া নিয়ে পরীক্ষা করে দেখবেন।
৯। বিশ্লেষণ করুন
- ইউটিউব অ্যানালিটিক্সঃ আপনার ভিডিওর পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করুন এবং সে অনুযায়ী আপনার কনটেন্ট তৈরি করুন।
১০। অন্য ইউটিউবারদের সাথে কলাবরেট করুন
- নতুন দর্শকদের আকৃষ্ট করুনঃ অন্য ইউটিউবারদের সাথে কলাবরেট করে নতুন দর্শকদের আকৃষ্ট করুন।
১১। ইউটিউবের নিয়ম মেনে চলুন
- ইউটিউবের কপিরাইট নীতি মেনে চলুনঃ অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করবেন না।
- ভুল তথ্য ছড়াবেন নাঃ সবসময় সঠিক তথ্য দিন।
কোন ব্যক্তি প্রতি হিংসা বা ঘৃণা ছড়াবেন না আপনার ভিডিওতে হিংসা বা ঘৃণা ছড়ানোর মতো কোনো কিছু করবেন না। ইউটিউব থেকে সফল হতে সময় এবং ধৈর্যের প্রয়োজন। নিয়মিত ভিডিও তৈরি করুন, দর্শকদের সাথে যোগাযোগ রাখুন এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, আকর্ষণীয় ভিডিও আপলোড করুন! উপরোক্ত সকল উপায় সমূহ গুলো অনুসরণ করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে সফলভাবে পরিচালনা করতে পারবে।
ইউটিউব চ্যানেল কাস্টমাইজ করবেন যেভাবে
ইউটিউব চ্যানেল কাস্টমাইজ করার মাধ্যমে আপনার চ্যানেলটিকে আরও আকর্ষণীয় ও পেশাদার করে তুলতে পারবেন। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি বা কোন ভিউয়ার্সদের দেখে মনে হয় যেন প্রফেশনাল একটি ইউটিউব চ্যানেল। ইউটিউব চ্যানেল শুধু ভিডিও আপলোড করার জায়গা নয়, এটি আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডের প্রতিচ্ছবি। একটি ভালোভাবে কাস্টমাইজ করা চ্যানেল দর্শকদের আকর্ষণ করতে এবং তাদেরকে আপনার সাথে যুক্ত রাখতে সাহায্য করতে পারে। এখানে চ্যানেল কাস্টমাইজ করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ দেওয়া হলো
১। চ্যানেল আর্ট আপলোড করা
- ব্যানার (চ্যানেল আর্ট): আপনার চ্যানেলের থিম এবং কন্টেন্টের সাথে মিলে এমন একটি ব্যানার ডিজাইন করবেন। ইউটিউবের সাইজের সুপারিশকৃত মাপ হলো 2560 x 1440 পিক্সেল, অবশ্যই এই মাপটি অনুযায়ী ব্যানার ডিজাইন করবেন।
- ফটো বা গ্রাফিক্স: ব্যানারে প্রফেশনাল ফটো বা গ্রাফিক্স ব্যবহার করবেন যা আপনার চ্যানেলের পরিচয় এবং বিষয়বস্তু উপস্থাপন করে। এবং ব্যানার্জি দেখতে আরো আকর্ষণীয় এবং সুন্দর হয়ে উঠবে।
- ট্রেলার: চ্যানেলে প্রথমবার আসা দর্শকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় ট্রেলার তৈরি করুন।
- ফিচার করা ভিডিও: আপনার সেরা ভিডিওগুলোকে ফিচার করা ভিডিও হিসেবে সেট করুন।
- প্লেলিস্ট: বিষয়ভিত্তিক প্লেলিস্ট তৈরি করে দর্শকদের ন্যাভিগেশন সহজ করুন।
২। প্রোফাইল পিকচার
- চিহ্নিতকরণ: প্রোফাইল পিকচার এমন কিছু হওয়া উচিত যা সহজেই চিনে নেয়া যায়। এটি হতে পারে আপনার লোগো, একটি চিত্র বা কোনো বিশেষ চিহ্ন।
- প্রোফাইল পিকচার: আপনার মুখ বা চ্যানেলের লোগো ব্যবহার করুন। এটি যেন স্পষ্ট এবং স্বচ্ছ হয়। প্রোফাইল পিকচারের সাইজ হওয়া উচিত 800 x 800 পিক্সেল।
৩। চ্যানেল বিবরণ
- বর্ণনা: চ্যানেলের সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা লিখবেন যাতে দর্শকরা জানতে পারে আপনি কী ধরনের কনটেন্ট তৈরি করবে এবং কেন তারা আপনার চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করবে। সকল বিষয়গুলো ভালোভাবে উপস্থাপনা করবেন।
- কিওয়ার্ড: বিবরণে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন যাতে এটি সার্চে সহজে পাওয়া যায়।
৪। চ্যানেল লিঙ্ক ও সোশ্যাল মিডিয়া
- লিঙ্ক যোগ করা: চ্যানেলের সম্পর্কে অংশে আপনার ওয়েবসাইট, সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল বা অন্যান্য লিঙ্ক যোগ করবেন।
- কাস্টম লিঙ্ক: চ্যানেল আর্ট বা চ্যানেলের হোমপেজে কাস্টম লিঙ্ক যুক্ত করবেন।
৫। অভিনন্দন ভিডিও
- চ্যানেল ট্রেইলার: একটি স্বল্প দৈর্ঘ্যের ভিডিও তৈরি করবেন যা নতুন দর্শকদের চ্যানেলের থিম এবং কনটেন্ট সম্পর্কে জানাবে।
৬। চ্যানেল কাস্টমাইজেশন
- চ্যানেল ট্যাব: ‘Home,’ ‘Videos,’ ‘Playlists,’ ‘Channels,’ এবং ‘About’ ট্যাব গুলো কাস্টমাইজ করে নিন।
- প্লেলিস্ট তৈরি করা: ভিডিও গুলিকে প্লেলিস্টে ভাগ করবেন, যেমন ‘Popular Videos,’ ‘Tutorials,’ ‘Reviews,’ ইত্যাদি।
৭। ব্র্যান্ডিং ও লোগো
- লোগো ডিজাইন: যদি আপনার চ্যানেল ব্র্যান্ডেড হয়, একটি ইউনিক লোগো ডিজাইন করবেন যা আপনার ব্র্যান্ডের সাথে সম্পর্কিত।
৮। ডিফল্ট আপলোড সেটিংস
- ডিফল্ট সেটিংস কনফিগার: ভিডিও আপলোডের সময় ডিফল্ট সেটিংস কনফিগার করে নিবেন যাতে প্রতিবার ভিডিও আপলোড করার সময় সময় বাঁচাতে পারো।
৯। চ্যানেল আউটরো ও ইনট্রো
ইনট্রো ও আউটরো: আপনার ভিডিওতে ইনট্রো ও আউটরো যোগ করবেন যাতে ভিডিওগুলি আরও পেশাদার মনে হয় এবং চ্যানেলের ব্র্যান্ডিং বৃদ্ধি পায়।
উপরোক্ত সকল পদক্ষেপগুলো অবশ্যই অনুসরণ করবেন যার ফলে আপনার ইউটিউব খুব দ্রুত দর্শকের নিকটে আরও আকর্ষণীয়, পেশাদার এবং সহজবোধ্য করে তুলবে। একটি সুন্দর এবং ভালোভাবে কাস্টমাইজ করা চ্যানেল আপনার দর্শকদের একটি সুন্দর অভিজ্ঞতা দেবে যা আপনার চ্যানেলকে অন্যদের থেকে আলাদা করবে।
YouTube চ্যানেল খুব দ্রুত বড় করার অতিরিক্ত উপায় সমূহ
অনেক ব্যক্তি রয়েছে যারা অনেকদিন ধরে ইউটিউবে কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু সেভাবে তার চ্যানেলটিকে গ্রো করতে পারছে না। কিন্তু এমন ব্যক্তি রয়েছে যারা কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করার কারণে নতুন একটি চ্যানেল ক্রিয়েট করার কয়েক দিনের মধ্যেই সেটিকে অনেক বড় পর্যায়ে নিয়ে চলে যায়। এজন্য কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করে আপনিও তাদের মত আপনার চ্যানেলকে খুব দ্রুত বড় করতে পারবেন।
- নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুনঃ দর্শকদের আকৃষ্ট করতে এবং ধরে রাখতে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন। কেননা নিয়মিত ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে আপনার ভিডিওগুলো ভাইরাল হওয়ার চান্স অনেকটা বেশি থাকে। এজন্য রেগুলার টি মেইনটেইন করার চেষ্টা করবেন।
- ভালো মানের ভিডিও তৈরি করুনঃ ভালো আলো, শব্দ এবং একটি পরিষ্কার ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করুন। যাতে কোন ভিউয়ার্স আপনার ভিডিওটি দেখে প্রফেশনাল মনে করে।
- দর্শকদের সাথে যোগাযোগ রাখুনঃ মন্তব্যের জবাব দিন এবং আপনার দর্শকদের সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করুন।
- অন্য ইউটিউবারদের সাথে কলাবরেট করুনঃ নতুন দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য অন্য ইউটিউবারদের সাথে কলাবরেট করুন। কারণ বিগত দিনের যারা অনেক বড় বড় ধরনের ইউটিউবার তারা তাদের অভিজ্ঞতা মাধ্যমে আজকে অনেক বড় পর্যায়ে চলে এসেছে। তাদের অভিজ্ঞতার জানার চেষ্টা করবেন।
- ইউটিউবের নির্দেশিকা অনুসরণ করুনঃ ইউটিউবের নির্দেশিকা অনুসরণ করুন যাতে আপনার চ্যানেল বন্ধ না হয়ে যায়।
এ ক্ষেত্রে সর্ব প্রথমে আপনার সব থেকে বেশি যেটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে ধৈর্য, অবশ্যই আপনাকে ধৈর্য ধারণ করতে হবে এবং আপনার মেধা এবং পরিশ্রম দিয়ে কাজ করে যেতে হবে। এবং আশা করা যায় যে উপরুক্ত বিষয়গুলো অনুসরণ করলে আপনিও আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে খুব দ্রুত একটি বড় পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন।
ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কত খরচ হয়?
ইউটিউব চ্যানেল খুলতে কোনো খরচ হয় না। এটি সম্পূর্ণ ফ্রি। আপনাকে শুধু একটি গুগল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে, যার মাধ্যমেই আপনি ইউটিউবে ফ্রি চ্যানেল খুলতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে কোন মূল্য প্রদান করা লাগবে না।
তবে, আপনার চ্যানেলটিকে দ্রুত বড় করার জন্য ভবিষ্যতে চ্যানেল পরিচালনার ক্ষেত্রে কিছু খরচ হতে পারে, তাহলে চলুন এক নজরে দেখে নিন ভবিষ্যতে আপনার কত টাকা খরচ হতে পারে বা কেমন খরচ হতে পারে একটি চ্যানেলকে বড় করতে।
- ভিডিও প্রোডাকশনঃ ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, লাইটিং, কম্পিউটার ইত্যাদি সরঞ্জাম কিনতে খরচ হতে পারে।
- এডিটিং সফটওয়্যারঃ যদি আপনি প্রিমিয়াম এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করেন, তার জন্য সাবস্ক্রিপশন ফি থাকতে পারে। এছাড়াও ভালো ভিডি এডিট করার জন্য কম্পিউটার প্রয়োজন সে ক্ষেত্রে কম্পিউটার নিতে কিছু টাকা খরচ হবে।
- গ্রাফিক্স এবং থাম্বনেইল ডিজাইনঃফটোশপ বা অন্য কোনো পেইড টুল ব্যবহার করলে সেটাও খরচের মধ্যে পড়ে। আপনার ভিডিওকে আকর্ষণীয় এবং সুন্দর করে তুলতে একটি থাম্বেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এজন্য এক্ষেত্রে আপনার খরচ হতে পারে।
- ইন্টারনেট খরচঃ ভিডিও আপলোডের জন্য একটি ভালো ইন্টারনেট কানেকশন দরকার।
এই খরচগুলো নির্ভর করবে আপনার প্রয়োজন এবং ভিডিওর গুণগত মানের উপর। প্রথমত youtube চ্যানেল খুলে তেমন একটি খরচ হয়না কিন্তু পরবর্তীতে চ্যানেলটিকে খুব ভালোভাবে বিকাসিত করার জন্য অবশ্যই কিছু টাকা খরচ করতে হয়। যার ফলে আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি খুব দ্রুত বিকশিত হয়ে উঠবে। এবং আপনার টাকা উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম গ্রুপে পরিণত হবে।
ইউটিউব চ্যানেল কেন ভেরিফাই করবেন ভেরিফাই করার সুবিধা
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করা মানে হল আপনার চ্যানেলটি অফিশিয়াল হিসেবে চিহ্নিত করা। এটি আপনার চ্যানেলের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায় এবং অনেক অতিরিক্ত সুবিধা দেয়। এছাড়াও ভেরিফাই করার ফলে আপনার চ্যানেলটি বিভিন্ন ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া থেকে বিরত থাকবে।
অর্থাৎ এক্ষেত্রে যদি আপনার চ্যানেলটি ভেরিফাই করা থাকে আর আপনি যদি ইউটিউব এর পলিসি মেনে কাজ করে থাকেন তাহলে আপনার চ্যানেলটি আশা করা যায় কোন ক্ষতি হবে না।
আরো পড়ুনঃ নগদ কাস্টমার কেয়ার নাম্বার সম্পর্কে জেনে নিন।
- ব্লু টিকঃ অর্থাৎ আপনার চ্যানেলের নামের পাশে একটি ব্লু টিক চিহ্ন দেখা যাবে। জাপানের চ্যানেলটিকে দেখতে আরো আকর্ষণ নিয়ে গড়ে তুলবে।
- কাস্টম থাম্বনেইলঃ আপনি আপনার ভিডিওর জন্য কাস্টম থাম্বনেইল ব্যবহার করতে পারবেন।
- লাইভ স্ট্রিমিংঃ আপনি লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারবেন।
- কন্টেন্ট আইডি দাবির বিরুদ্ধে আপিল করাঃ যদি কেউ আপনার কনটেন্টের উপর দাবি করে, তাহলে আপনি আপিল করতে পারবেন।
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করার নিয়ম
ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করা খুবই সহজ এবং এটি চ্যানেলের কিছু অতিরিক্ত সুবিধা আনলক করে, যেমন: লম্বা ভিডিও আপলোড, কাস্টম থাম্বনেইল ব্যবহার ইত্যাদি। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করার জন্য নিচে ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া দেওয়া হলো
১। ইউটিউবে সাইন ইন করুন এবং প্রথমে আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে YouTube সাইটে সাইন ইন করুন।
২। ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফিকেশন পেজে যান এবং ইউটিউবের ভেরিফিকেশন পেজে যেতে এই লিংকে ক্লিক করুন।
৩। ভেরিফিকেশন পদ্ধতি নির্বাচন করুন
এখানে আপনাকে দুটি পদ্ধতির যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে।
- ভয়েস কলের মাধ্যমে ভেরিফাইঃ ইউটিউব একটি অটোমেটেড ফোন কলের মাধ্যমে আপনাকে একটি ভেরিফিকেশন কোড দেবে।
- টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে ভেরিফাইঃ আপনার ফোনে একটি ভেরিফিকেশন কোড পাঠানো হবে।
৪। আপনার ফোন নম্বর প্রবেশ করান
পদ্ধতি বেছে নেওয়ার পর আপনার মোবাইল নম্বর প্রবেশ করান, যেখানে ইউটিউব কোড পাঠাবে।
৫। ভেরিফিকেশন কোড প্রবেশ করান
আপনার ফোনে একটি কোড পাঠানো হবে (SMS বা কলের মাধ্যমে)। সেই কোডটি নির্দিষ্ট স্থানে প্রবেশ করান এবং সাবমিট করুন।
৬। ভেরিফিকেশন সফল হলে
সঠিক কোড প্রবেশ করালে আপনার চ্যানেল ভেরিফাই হয়ে যাবে। এরপর থেকে আপনি ইউটিউবের অতিরিক্ত কিছু ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন যেমন ১৫ মিনিটের বেশি দৈর্ঘ্যের ভিডিও আপলোড, কাস্টম থাম্বনেইল, লাইভ স্ট্রিমিং ইত্যাদি।
৭। ভেরিফিকেশন চেক করা
ভেরিফিকেশন সফল হওয়ার পর, ইউটিউব স্টুডিওতে গিয়ে আপনার চ্যানেলের সেটিংসে চেক করতে পারেন যে চ্যানেলটি ভেরিফাই হয়েছে কিনা।
এই পদ্ধতি অনুসরণ করলেই সহজে আপনার ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করতে পারবেন। ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করা বাধ্যতামূলক নয় কেননা কোন ব্যক্তি না চাইলেও ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই নাও করতে পারে। তবে ইউটিউব চ্যানেল ভেরিফাই করলে চ্যানেলের বিশেষজ্ঞতা ও গুণগতমান বৃদ্ধি পায়।
ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার উপায় সমূহ জেনে নিন
ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় করার বিভিন্ন উপায় রয়েছে। চ্যানেলের জনপ্রিয়তা, ভিউয়ারশিপ এবং কন্টেন্টের মান অনুযায়ী আয় করার সুযোগগুলো খুলে যায়। বর্ধমান সময়ে অধিকাংশ মানুষ এই ইউটিউব থেকে অনেক ভালো অংকের টাকা ইনকাম করে আসতেছি। এজন্য আপনিও যদি চান এ সকল উপায় অবলম্বন করে তাদের মত আপনিও অনেক টাকা ইনকাম করতে পারবেন। নিচে ইউটিউব থেকে আয় করার কিছু প্রধান উপায় দেওয়া হলোঃ
১। ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম (YPP) ও বিজ্ঞাপন রাজস্ব
ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম এ যোগদান করলে আপনি বিজ্ঞাপন থেকে আয় করতে পারেন।
যোগদানের জন্য শর্তসমূহঃ
- গত ১২ মাসে ৪,০০০ ঘণ্টার ওয়াচ টাইম থাকতে হবে।
- চ্যানেলে কমপক্ষে ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে।
- ইউটিউবের নীতিমালা এবং মনিটাইজেশন পলিসি মেনে চলতে হবে।
- মনিটাইজেশন সক্ষম হলে, আপনার ভিডিওর আগে, মাঝে বা শেষে বিজ্ঞাপন দেখানো হবে। যার মাধ্যমে আপনার ইনকাম শুরু হয়ে যাবে।
২। চ্যানেল মেম্বারশিপ
আপনার চ্যানেলে মেম্বারশিপ সুবিধা চালু করতে পারেন, যেখানে দর্শকরা মাসিক ফি দিয়ে সদস্য হতে পারবেন।
- মেম্বাররা বিশেষ ব্যাজ, ইমোজি, এবং কাস্টম সুবিধা পাবে যা সাধারণ দর্শকরা পায় না।
- চ্যানেল মেম্বারশিপ যোগ করতে হলে আপনার চ্যানেলে ৩০,০০০ সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে।
৩। সুপার চ্যাট ও সুপার স্টিকার
লাইভ স্ট্রিমিং এর সময় দর্শকরা সুপার চ্যাট বা সুপার স্টিকার কিনতে পারে, যা তাদের কমেন্টকে হাইলাইট করে। এই পদ্ধতিতে সরাসরি অর্থ আয় করা যায়, বিশেষ করে লাইভ স্ট্রিমিং চ্যানেলের জন্য।
৪। ইউটিউব প্রিমিয়াম
ইউটিউব প্রিমিয়াম ব্যবহারকারীরা বিজ্ঞাপন ছাড়া ভিডিও দেখেন। তাদের সাবস্ক্রিপশন ফি এর একটি অংশ কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের মধ্যে ভাগ করা হয়, আপনার ভিডিওর ভিউ অনুযায়ী।
৫। স্পনসরশিপ ও ব্র্যান্ড ডিল
জনপ্রিয় চ্যানেলের সাথে বিভিন্ন ব্র্যান্ড কাজ করতে চায়। তারা ভিডিওতে তাদের পণ্য বা সেবার প্রচারের জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করতে পারে। আপনি সরাসরি ব্র্যান্ডের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন অথবা স্পনসরশিপ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করতে পারেন।
৬। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
আপনার ভিডিওতে বিভিন্ন প্রোডাক্টের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করতে পারেন। যদি দর্শকরা সেই লিংকের মাধ্যমে কিছু কিনে, তাহলে আপনি কমিশন পাবেন।
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট বা অন্যান্য অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামগুলোতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
৭। নিজের পণ্য বা মুচেন্ডাইজ বিক্রি
আপনি নিজের পণ্য (যেমন: টি-শার্ট, মগ, হুডি) বিক্রি করতে পারেন।
চ্যানেলের বর্ণনা বা ভিডিওতে পণ্যের লিংক শেয়ার করে দর্শকদের আপনার পণ্য কিনতে উৎসাহিত করতে পারেন।
৮। কোর্স বা ই-বুক বিক্রি
আপনি যদি কোনো বিশেষ বিষয়ে দক্ষ হন, তবে আপনার জ্ঞান দিয়ে ই-বুক বা অনলাইন কোর্স তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। চ্যানেলের মাধ্যমে আপনার কোর্স বা ই-বুকের প্রচারণা চালিয়ে আয় করতে পারবেন।
৯। ফ্যান ফান্ডিং বা ডোনেশন
দর্শকরা স্বেচ্ছায় ডোনেশন দিতে পারে। আপনি Patreon, Buy Me a Coffee, বা Ko-fi প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন। এই পদ্ধতিতে আপনার ফ্যানরা আপনার কাজকে সরাসরি সমর্থন করতে পারে।
১০। লাইসেন্সিং ভিডিও কন্টেন্ট
আপনি যদি কোনো ইউনিক ভিডিও তৈরি করেন এবং এটি ভাইরাল হয়ে যায়, তবে বিভিন্ন মিডিয়া বা কোম্পানি আপনার ভিডিও ব্যবহার করার জন্য লাইসেন্স ফি দিতে পারে। বিভিন্ন সংস্থা বা নিউজ মিডিয়াগুলো আপনার ভিডিও কিনে নিতে পারে।
ইউটিউব থেকে আয় করতে হলে ধৈর্য, সৃজনশীলতা, এবং সময় দিতে হবে। নির্দিষ্ট বিষয়ে কন্টেন্ট তৈরি করা এবং দর্শকদের সাথে ইন্টার্যাকশন বাড়ানো আয়ের পথগুলো সহজ করে। ইউটিউব থেকে আয় করার জন্য সর্বপ্রথমে আপনাকে ধৈর্যশীল হতে হবে কেননা কোন ব্যক্তিই শুরুতে ইনকাম করতে পারবে না এর জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে এবং বুদ্ধি পরিশ্রম দিয়ে কাজ করে যেতে হবে। তাহলে অবশ্যই একটা সময় গিয়ে youtube আপনাকে অনেক কিছু করে দিবে।
ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও কিভাবে বানাবো?
ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানানো এখন আর কোনো কঠিন কাজ নয়। স্মার্টফোন থেকে শুরু করে প্রফেশনাল ক্যামেরা, সব কিছু দিয়েই আপনি ভিডিও তৈরি করতে পারেন। আসুন জেনে নিই কীভাবে আপনি একটি আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করবেন আপনার চ্যানেলের জন্য।
ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানানোর প্রক্রিয়া কয়েকটি ধাপে ভাগ করা যায়। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে সহজেই ভিডিও তৈরি করতে পারেন
১। কনটেন্ট পরিকল্পনা করা
- বিষয় নির্বাচনঃ আপনি আপনার চ্যানেলের জন্য কী ধরনের ভিডিও তৈরি করবেন তা ঠিক করতে হবে। সেটি যে কোন ভিডিও হতে পারেউদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে টিউটোরিয়াল, ভ্লগ, রিভিউ, বিনোদন ইত্যাদি।
- স্ক্রিপ্ট লেখাঃ ভিডিওতে যা বলতে বা দেখাতে চাও তার জন্য একটি স্ক্রিপ্ট লিখে নাও। একটি সুন্দর বা ভালো স্ক্রিপ কোন একটি ভিডিওকে আরো সুসংগত করতে সাহায্য করে।
- দর্শকঃ আপনার ভিডিও কার জন্য? আপনার লক্ষ্য দর্শক কে? আপনি তা নির্বাচন করুন এবং তাদেরকে টার্গেট করে ভিডিও তৈরি করুন।
- ট্রেন্ডিং টপিকসঃ জনপ্রিয় বা ট্রেন্ডিং বিষয়ে ভিডিও বানালে দর্শকদের আকর্ষণ করা সহজ হয়।
- স্টোরিবোর্ড তৈরিঃ আপনার ভিডিও কেমন হবে, তার একটি ছোট ছোট চিত্রের মাধ্যমে একটি স্টোরিবোর্ড তৈরি করুন।
২। ভিডিও শুটিং
ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন অর্থাৎ ভালো মানের ভিডিও করার জন্য ফোনের ক্যামেরা বা প্রফেশনাল ক্যামেরা ব্যবহার করতে পারেন এবং আপনার ভিডিওর সাউন্ড কোয়ালিটি সুন্দর রাখতে, ভালো অডিওর জন্য আলাদা মাইক্রোফোন ব্যবহার করতে পারেন।
- আলো এবং ব্যাকগ্রাউন্ডঃ আপনার ভিডিওতে অবশ্যই ভালো ভিডিওর জন্য পর্যাপ্ত আলো নিশ্চিত করবেন। ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড সজ্জিত ও পরিষ্কার রাখবেন কেননা অবশ্যই আপনার ভিডিওটিকে আকর্ষণীয় এবং সুন্দর হতে হবে।
- শব্দঃ পরিষ্কার শব্দ রেকর্ড করার জন্য একটি ভালো মাইক্রোফোন ব্যবহার করুন।
- স্ট্যাবিলিটিঃ শুটিংয়ের সময় ট্রাইপড বা ফোন হোল্ডার ব্যবহার করলে ভিডিও আরও স্ট্যাবল হবে।
- এঙ্গেলঃ বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে শুটিং করুন।
- কম্পোজিশনঃ ভিডিও ফ্রেমটি কীভাবে সাজাবেন, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৩। ভিডিও এডিটিং
- এডিটিং সফটওয়্যারঃ যেমন Adobe Premiere Pro, Final Cut Pro, DaVinci Resolve, বা সহজ কোনো মোবাইল অ্যাপ যেমন InShot, Kinemaster ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারবেন।
- ট্রিমিং এবং কাটঃ অপ্রয়োজনীয় অংশ কেটে ফেলো এবং ভিডিওর ফ্লো সুন্দর করতে হবে।
- ট্রানজিশন ও এফেক্টঃ কিছু সুন্দর ট্রানজিশন এবং এফেক্ট যোগ করলে ভিডিও আরও আকর্ষণীয় হবে।
- মিউজিক এবং সাউন্ড ইফেক্টঃ ভিডিওর মুড অনুযায়ী ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক এবং সাউন্ড ইফেক্ট যোগ করতে হবে।
৪। ভিডিও আপলোড
- টাইটেল এবং ডেসক্রিপশনঃ আকর্ষণীয় টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন লিখতে হবে যাতে ভিডিওটি দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
- থাম্বনেইল তৈরিঃ ভিডিওর একটি আকর্ষণীয় থাম্বনেইল বানাতে হবে, কারণ থাম্বনেইলই প্রথমে দর্শকের নজর কাড়ে।
- ট্যাগ এবং ক্যাটাগরিঃ ভিডিওটির জন্য সঠিক ট্যাগ এবং ক্যাটাগরি ব্যবহার করতে হবে যাতে এটি সহজেই সার্চ রেজাল্টে আসে।
- বিবরণঃ ভিডিও সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিন।
৫। বর্তমান সময়ে অধিক জনপ্রিয় কিছু ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার সমূহ
- Adobe Premiere Pro: পেশাদারদের জন্য একটি শক্তিশালী সফটওয়্যার।
- Final Cut Pro: ম্যাক ব্যবহারকারীদের জন্য একটি জনপ্রিয় সফটওয়্যার।
- DaVinci Resolve: একটি বিনামূল্যের এবং পেইড ভার্সনও আছে।
- iMovie: ম্যাক এবং আইওএস ডিভাইসের জন্য একটি সহজ ব্যবহারযোগ্য সফটওয়্যার।
- Shotcut: একটি ওপেন সোর্স এবং বিনামূল্যের ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার।
আশা করা যায় উপরোক্ত সকল বিষয়গুলো অনুসরণ করলে সহজেই ইউটিউবের জন্য ভালো মানের ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এবং আপনি চ্যানেলটিকে একটি বড় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য এ সকল বিষয়গুলো অবশ্যই আপনার মনে রাখতে হবে এবং সে অনুযায়ী পরিশ্রম করতে হবে।
থাম্বেল তৈরি করার পূর্বে যে সকল বিষয়ে খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরী
- সরল এবং স্পষ্টঃ থাম্বনেইলে আপনার ভিডিওর মূল বিষয়টি স্পষ্টভাবে তুলে ধরুন।
- আকর্ষণীয়ঃ এমন কিছু ব্যবহার করুন যা দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে।
- উচ্চমানেরঃ একটি ধারালো এবং পরিষ্কার থাম্বনেইল ব্যবহার করুন।
- টেক্সটঃ থাম্বনেইলে স্বল্প এবং সহজে পড়ার মতো টেক্সট ব্যবহার করুন।
- রংঃ আকর্ষণীয় এবং সম্পূরক রং ব্যবহার করুন।
- থাম্বনেইল পরীক্ষা করুনঃ বিভিন্ন ধরনের থাম্বনেইল তৈরি করে দেখুন এবং দেখুন কোনটি সবচেয়ে ভালো কাজ করে।
- প্রতিযোগীদের থাম্বনেইল দেখুনঃ আপনার প্রতিযোগীরা কেমন থাম্বনেইল ব্যবহার করছে, তা দেখুন।
- নিয়মিত আপডেট করুনঃ আপনার থাম্বনেইল ডিজাইন নিয়মিত আপডেট করুন।
একটি ভালো থাম্বনেইল আপনার ভিডিওর সফলতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কিছু সময় নিয়ে একটি আকর্ষণীয় এবং কার্যকর থাম্বনেইল তৈরি করুন। থাম্বেল তৈরি করার পূর্বে অবশ্যই উপরোক্ত বিষয়গুলো মনে রাখবেন এবং তার উপর ভিত্তি করে একটি আকর্ষণীয় ডিজাইন দিয়ে থাম্বেল তৈরি করবেন। যা আপনার ভিডিওটিকে ভিউয়ার্সদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে সাহায্য করবে।
ইউটিউব চ্যানেলের জন্য থাম্বনেইল যেভাবে বানাবেন?
ইউটিউব চ্যানেলের থাম্বনেইল তৈরি করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস রয়েছে যা অনুসরণ করলে থাম্বনেইলটি আকর্ষণীয় এবং ক্লিকযোগ্য হবে। একটি আকর্ষণীয় থাম্বনেইলই আপনার ভিডিওকে দর্শকদের কাছে আকর্ষণ করার প্রথম ধাপ। একটি ভালো থাম্বনেইল আপনার ভিডিও সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা দেবে এবং দর্শকদের ক্লিক করতে উৎসাহিত করবে। তাহলে চলুন কিভাবে একটি আকর্ষণীয় থামবেল তৈরি করবেন।
থাম্বেল তৈরি করার ধাপ স্টেপ বাই স্টেপ
১। ডিজাইন টুল নির্বাচন
- ফ্রি টুলসঃ Canva, Pixlr, Crello, Adobe Spark ইত্যাদি।
- প্রফেশনাল টুলসঃ Adobe Photoshop, GIMP ইত্যাদি।
২। সাইজ এবং রেজোলিউশন
- থাম্বনেইলের সঠিক সাইজ হল 1280 x 720 পিক্সেল। এটি ইউটিউবের স্ট্যান্ডার্ড সাইজ।
৩। ডিজাইন স্টাইল
- স্পষ্ট টেক্সটঃ অবশ্যই বড়, পাঠযোগ্য এবং চোখে পড়ার মতো টেক্সট ব্যবহার করবেন। সাধারণত, থাম্বনেইলে ২-৩টি বড় শব্দ থাকে।
- উজ্জ্বল রঙঃ উজ্জ্বল ও কন্ট্রাস্টিং রঙ ব্যবহার করলে থাম্বনেইল বেশি চোখে পড়ে।
- মুখাবয়বঃ কোনো মুখের ছবি ব্যবহার করলে, বিশেষ করে যদি তা একটি আবেগপূর্ণ অভিব্যক্তি থাকে, তাহলে তা দর্শকদের বেশি আকর্ষণ করতে পারে।
৪। ছবি এবং গ্রাফিক্স
- উচ্চমানের ছবিঃ পরিষ্কার এবং উচ্চ রেজোলিউশনের ছবি ব্যবহার করবেন। ছবি সোজাসুজি বা ফোকাসে রাখতে হবে।
- গ্রাফিক্স এবং আইকনঃ প্রয়োজন হলে গ্রাফিক্স, আইকন, বা অন্যান্য ভিজ্যুয়াল উপাদান যোগ করবেন।
৫। টেক্সট এবং ফন্ট
- পাঠযোগ্য ফন্টঃ অবশ্যই পরিষ্কার এবং সহজ পাঠযোগ্য ফন্ট ব্যবহার করবেন। বড় এবং স্পষ্ট ফন্ট নির্বাচন করবেন যাতে থাম্বনেইল ছোট হলে দেখতেও সমস্যা না হয়।
- ফন্টের রঙঃ টেক্সটের রঙ এমনভাবে নির্বাচন করবেন যা ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান।
৬। থাম্বনেইল লেআউট
- ফোকাস পয়েন্টঃ থাম্বনেইলে এমন কিছু রাখবেন যা সরাসরি দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
- কন্ট্রাস্টঃ থাম্বনেইল ডিজাইনে ভাল কন্ট্রাস্ট নিশ্চিত করবেন যাতে টেক্সট এবং ইমেজ স্পষ্টভাবে আলাদা থাকে।
৭। পরীক্ষা করা
বিভিন্ন ডিভাইসে পরীক্ষাঃ থাম্বনেইলটি বিভিন্ন ডিভাইসে কেমন দেখাচ্ছে তা পরীক্ষা করবেন। মোবাইল এবং কম্পিউটারে ঠিকভাবে দেখা যাচ্ছে কিনা নিশ্চিত করবেন।
উপরোক্ত সকল উপায় সমূহ অনুসরণ করলে অবশ্যই আপনার থাম্বনেইল আরো আকর্ষণীয় হবে এবং দর্শকদের ক্লিক করার আগ্রহ অনেক বৃদ্ধি পাবে। এজন্য আপনার চ্যানেলটিকে ভালো একটি পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনার ভিডিওতে অবশ্যই উপরোক্ত বিষয়গুলো থাকতে হবে। এজন্য ভিডিও বানানোর ক্ষেত্রে অবশ্যই দেখবেন উপরোক্ত বিষয়গুলো আপনার ভিডিওতে রয়েছে কি না।
ইউটিউব চ্যানেল গ্রো করার উপায়
চাইলে একটি youtube চ্যানেলকে খুব তাড়াতাড়ি গ্রো করা সম্ভব না কেননা আপনি আপনার চ্যানেলটিকে তখনই সমৃদ্ধি এবং বড় একটি পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারবেন যখন আপনি জানবেন এবং বুঝবেন যে কিভাবে বর্তমান সময়ে বড় বড় ইউটিউবাররা আজকে এই পর্যায়ে আসছে। এজন্য তাদের নীতি মালা অনুসরণ করলে আপনিও তাদের মত একটা সময় পর তাদের জায়গায় পৌঁছে যাবেন। ইউটিউব চ্যানেল গ্রো করার জন্য বেশ কিছু কার্যকরী কৌশল রয়েছে। নিচে কিছু প্রধান উপায় দেওয়া হলো
১। সুশৃঙ্খল কনটেন্ট পরিকল্পনা
- নিয়মিত আপলোড: নিয়মিত অর্থাৎ রেগুলারটি মেন্টেন করে ভিডিও আপলোড করার চেষ্টা করবেন, যেমন প্রতি সপ্তাহে বা প্রতি মাসে নির্দিষ্ট দিনে।
- কনটেন্ট ক্যালেন্ডার: একটি কনটেন্ট ক্যালেন্ডার তৈরি করবেন যা আপনার ভিডিওগুলির পরিকল্পনা এবং সময়সূচী বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
২। ভিডিও এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন)
- টাইটেল ও ট্যাগ: আকর্ষণীয় ও কিওয়ার্ড-সমৃদ্ধ টাইটেল ব্যবহার করবেন। ভিডিওর ট্যাগে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড যোগ করবেন।
- ডেসক্রিপশন: ভিডিওর বিস্তারিত ও কিওয়ার্ড-সমৃদ্ধ description নিয়ে বর্ণনা দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
- থাম্বনেইল: চোখে পড়ার মতো এবং কনটেন্টের সাথে সম্পর্কিত ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।
৪। অডিয়েন্সের সাথে যোগাযোগ
- কমেন্টের উত্তর: দর্শকদের মন্তব্যের জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবেনএবং তাদের সাথে যোগাযোগ রাখবেন, যা আপনাকে চ্যানেল সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এছাড়াও কমেন্ট বক্সে অনেকেই অনেক ধরনের প্রশ্ন করে থাকে সেখানে দর্শকদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
৫। প্রচার ও মার্কেটিং
- সোশ্যাল মিডিয়া: আপনার ভিডিওগুলি সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করার চেষ্টা করবেন। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদিতে প্রমোশন করবেন, যার ফলে আপনার ভিডিওতে অধিক দর্শক পেতে সাহায্য করবে।
- ফোরাম ও কমিউনিটি: ইউটিউব ভিডিও নিয়ে আলোচনা করা ফোরাম বা কমিউনিটিতে যোগ দিবেন এবং ভিডিও করার চেষ্টা করবেন।
৬। ক্রস-প্ল্যাটফর্ম প্রমোশন
- অন্য ইউটিউবারদের সাথে সহযোগিতা করার চেষ্টা করবেনএবং একে অপরের চ্যানেল প্রচার করবেন, যার ফলে আপনার চ্যানেল এবং তার চ্যানেল দুইজনেরটাই খুব তাড়াতাড়ি গ্রো করবে।
- আপনার ভিডিওগুলো ব্লগ বা ওয়েবসাইটে শেয়ার করবেন।
৭। ভিডিও কোয়ালিটি
- ভিডিওর কোয়ালিটি, অডিও এবং ভিজ্যুয়াল্সে মনোযোগ দিবেন। উন্নত মানের ভিডিও তৈরি করবেন যা আপনার দর্শকদের আকর্ষণ করবে।
- এডিটিং প্রফেশনাল লুক তৈরির জন্য ভিডিওগুলি ভালোভাবে এডিট করবেন।
৮। অ্যানালিটিক্স ব্যবহার
- পারফরম্যান্স ট্র্যাকিং: ইউটিউব অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করবেন ভিডিওগুলোর পারফরম্যান্স ট্র্যাক করার চেষ্টা করবেন এবং উন্নতির জন্য ইনসাইট সংগ্রহ করবেন।
- ট্রেন্ড ও ডেটা: দর্শকদের আগ্রহ ও ট্রেন্ডের ওপর ভিত্তি করে কনটেন্ট তৈরি করবেন সবসময়।
৯। আনবক্সিং ও গিভওয়ে
- আনবক্সিং ভিডিও: জনপ্রিয় পণ্য বা গ্যাজেটের আনবক্সিং ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
- গিভওয়ে: দর্শকদের আকর্ষণ করার জন্য গিভওয়ে বা কনটেস্ট আয়োজন করবেন।
১০। ব্র্যান্ডিং
- চ্যানেল ব্র্যান্ডিং: চ্যানেলের একটি পরিচিত ব্র্যান্ড তৈরি করবেন এবং তা ভিডিওর প্রতিটি অংশে প্রতিফলিত করার জন্য চেষ্টা করবেন।
- লোগো ও থাম্বনেইল: চ্যানেলের লোগো ও থাম্বনেইল একটি ইউনিক ব্র্যান্ড আইডেন্টিটি প্রদান করবেন।
অবশ্যই এই কৌশলগুলি অনুসরণ করলে আপনার ইউটিউব চ্যানেল গ্রো করতে সহায়তা করবে এবং আপনার দর্শক সংখ্যা বাড়াবে এবং উপরোক্ত বিষয়গুলো সব সময় মাথায় রাখবেন। এবং সে অনুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করবেন তাহলেই একটা সময় পর তার রেজাল্ট আপনি স্বচক্ষে দেখতে পাবেন।
কিভাবে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করব (YouTube Video Upload)
অনেকে রয়েছে যারা নতুন ইউটিউব চ্যানেল ক্রিয়েট করে নিজেকে একদম নিম্ন পর্যায়ে থেকে শুরু করতে যাই তাদের ক্ষেত্রে, এছাড়া অনেকে রয়েছে ভিডিও আপলোড সম্পর্কে অনেক কিছুই জানে কিন্তু প্রফেশনাল ভাবে ভিডিও আপলোড কিভাবে করতে হয় সেটি বিষয়ে অবগত নয়। এজন্য ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার নিচে দেওয়া ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
১। ইউটিউবে লগ ইন করো, এবং ইউটিউব ওপেন করে তোমার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগ ইন করবেন।
২। আপলোড বাটন ক্লিক করবেন, ইউটিউব হোমপেজের উপরের ডান কোণে একটি ক্যামেরার আইকন থাকবে, যার সাথে একটি প্লাস (+) চিহ্ন থাকে। সেখানে ক্লিক করবেন।
৩। ভিডিও সিলেক্ট করবেন আপলোড ভিডিও অপশনটি নির্বাচন করতে হবে। এরপর আপনার কম্পিউটার থেকে ভিডিও ফাইল নির্বাচন করবেন।
৪। ভিডিও ডিটেইলস পূরণ করো
- টাইটেল: ভিডিওটির একটি আকর্ষণীয় এবং বর্ণনামূলক টাইটেল লিখবেন।
- ডেসক্রিপশন: ভিডিওর বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা লিখবেন এবং প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন।
- ট্যাগ: ভিডিওর সাথে সম্পর্কিত ট্যাগ যোগ করবেন যাতে সার্চে সহজে পাওয়া যায়।
- থাম্বনেইল: ভিডিওর জন্য একটি থাম্বনেইল নির্বাচন করবেন বা কাস্টম থাম্বনেইল আপলোড করবেন।
৫। ভিডিও সেটিংস কনফিগার করো
- প্রাইভেসি সেটিংস: ভিডিওটি পাবলিক, আনার, বা প্রাইভেট হিসেবে সেট করতে হবে।
- পাবলিক: সবাই দেখতে পারবে।
- আনার: শুধুমাত্র নির্দিষ্ট ব্যক্তিরা দেখতে পারবে।
- প্রাইভেট: শুধুমাত্র আপনার অনুমোদিত ব্যক্তিরা দেখতে পারবে।
- প্লেলিস্ট: ভিডিওটি কোন প্লেলিস্টে যোগ করতে চান সেটি নির্বাচন করবেন।
৬। অ্যাডভান্সড সেটিংস
- ইউটিউব অ্যানালিটিক্স: ভিডিও আপলোডের পর ইউটিউব অ্যানালিটিক্সের মাধ্যমে পারফরম্যান্স ট্র্যাক করতে হবে।
- সাবটাইটেল: সাবটাইটেল যোগ করার জন্য অপশন থাকে। প্রয়োজনে সাবটাইটেল আপলোড করবেন।
৭। পাবলিশ করো
- সব তথ্য পূরণ করার পর "পাবলিশ" বাটন ক্লিক করো।
৮। ভিডিও শেয়ার করা
- ভিডিও আপলোডের পর, আপনি ভিডিও লিঙ্ক শেয়ার করতে পারবেন সোশ্যাল মিডিয়া বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে।
৯। ভিডিও প্রচার
- সোশ্যাল মিডিয়া: ভিডিওটি ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদিতে শেয়ার করবেন।
- ইনবক্সিং: যদি সম্ভব হয়, অন্যান্য ইউটিউবার বা ব্লগারদের সাথে সহযোগিতা করে ভিডিও প্রচার করবেন।
উপরোক্ত সকল বিষয়গুলো অনুসরণ করলে খুব সহজেই আপনি আপনার youtube চ্যানেলে একটি ভিডিও আপলোড করতে পারবেন, শুধু তাই নয় ভিডিও টিকে আকর্ষণীয় এবং ভিউয়ার্সদের কাছে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে অনেক সাহায্য করবে। এজন্য অবশ্যই উপরুক্ত বিষয়গুলো মেনে ভিডিও আপলোড করার চেষ্টা করবেন।
সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর টিপস (Tips for Growing Subscribers)
সাধারণত সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর জন্য আপনার কাজ এবং আপনার ভিডিও যথেষ্ট আকর্ষণীয় এবং দর্শকদের কাছে মূল্যবান হওয়া লাগবে। যার ফলে কোন দর্শক যদি আপনার আপলোডকৃত ভিডিওগুলো পছন্দ করে থাকে তাহলে সে নিজে থেকেই আপনার চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করে দিবে। তবে দর্শকদের নজর কেরে কিভাবে ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর যায় চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১। বৈচিত্র্যময় ও মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করবেন
- নিয়মিত আপলোড: একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী অনুসরণ করে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করবেন।
- উচ্চমানের কনটেন্ট: ভিডিওর কোয়ালিটি, অডিও এবং ভিজ্যুয়ালস চমৎকার হওয়া উচিত।
২। চ্যানেল ব্র্যান্ডিং ও প্রফেশনালিজম
- প্রোফেশনাল থাম্বনেইল ও চ্যানেল আর্ট: আকর্ষণীয় ও প্রফেশনাল থাম্বনেইল ও চ্যানেল আর্ট ডিজাইন করতে হবে।
- ইউনিক ব্র্যান্ডিং: চ্যানেলের লোগো, স্লোগান ও থিম সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া উচিত।
৩। সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার
- সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম: আপনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন এবং ওয়েবসাইট বা ব্লগে প্রচার করবেন।
- কমিউনিটি অংশগ্রহণ: ফেসবুক গ্রুপ, টুইটার চ্যাট, এবং অন্যান্য অনলাইন কমিউনিটিতে সক্রিয় থাকবেন।
৪। অডিয়েন্সের সাথে যোগাযোগ
- কমেন্টস ম্যানেজমেন্ট: দর্শকদের মন্তব্যের উত্তর দাও এবং তাদের সাথে আলোচনা করো।
- ফিডব্যাক গ্রহণ: দর্শকদের ফিডব্যাক শোনো এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কনটেন্ট আপডেট করো।
৫। কাস্টমাইজড ভিডিও পছন্দের জন্য
- ভিডিওর শেষ অংশে সাবস্ক্রাইব করতে বলো: ভিডিওর শেষ অংশে দর্শকদের সাবস্ক্রাইব করতে উৎসাহিত করবেন বা সাবস্ক্রাইব করার জন্য কোন উপায় অবলম্বন করা।
- সাবস্ক্রাইব বোতাম ও কার্ডস: ভিডিওর মধ্যে সাবস্ক্রাইব বোতাম এবং কার্ডস ব্যবহার করবেন।
৬। ক্রস-প্ল্যাটফর্ম মার্কেটিং
- অন্যান্য ইউটিউবারদের সাথে ক্রস-প্ল্যাটফর্ম সহযোগিতা করবেন যাতে একে অপরের চ্যানেল প্রচার হয়।
- গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স: অন্যান্য জনপ্রিয় চ্যানেলে অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করবেন।
৭। ভিডিও এসইও
- কিওয়ার্ড রিসার্চ: ভিডিও টাইটেল, ডেসক্রিপশন, এবং ট্যাগে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন।
- ডেসক্রিপশন ও ট্যাগস: বিস্তারিত ও কিওয়ার্ড-সমৃদ্ধ ডেসক্রিপশন লিখবেন এবং উপযুক্ত ট্যাগ যোগ করবেন।
৮। ভিউয়ার এনগেজমেন্ট
- কন্টেস্ট ও গিভওয়ে: সাবস্ক্রাইবারদের আকর্ষণ করার জন্য কন্টেস্ট বা গিভওয়ে আয়োজন করবেন।
- লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার: দর্শকদের ভিডিও লাইক, কমেন্ট এবং শেয়ার করতে উৎসাহিত করবেন।
৯। অ্যানালিটিক্স ট্র্যাকিং
- পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ: ইউটিউব অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে ভিডিওগুলির পারফরম্যান্স ট্র্যাক করবেন এবং কোন কনটেন্ট সবচেয়ে ভালো করছে তা বিশ্লেষণ করবেন। তাহলে পরবর্তীতে ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে সাহায্য করবে।
১০। ইনোভেশন ও ক্রিয়েটিভিটি
- নতুন ট্রেন্ড: নতুন ট্রেন্ড ও আইডিয়া নিয়ে পরীক্ষা করে দেখবেন এবং কনটেন্টের নতুন নতুন ধারায় যাওয়ার চেষ্টা করবেন।
- বিভিন্ন কনটেন্ট স্টাইল: বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি করে দেখবেন, যেমন ভ্লগ, টিউটোরিয়াল, রিভিউ ইত্যাদি।
কোন চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর জন্য উপরোক্ত বিষয়গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অনেক বড় বড় চ্যানেল ফলো করলে দেখতে পারবেন যে তারা এ সকল বিষয়গুলো খুব যত্ন সহকারে অনুসরণ করে যাচ্ছে। যার ফলে আজকে তারা অনেক বড় একটি পর্যায়ে চলে গেছে। এজন্য উপরোক্ত সকল বিষয়গুলো ভালোভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করবেন।
ভিউ এবং এঙ্গেজমেন্ট বৃদ্ধি (Increasing Views and Engagement)
আপনি ইউটিউবে ভিউ এবং এঙ্গেজমেন্ট বাড়াতে চান, এটা খুবই স্বাভাবিক। এই পোস্টে আমি আপনাকে ইউটিউবের এই দুইটি গুরুত্বপূর্ণ মেট্রিক্স বাড়ানোর কয়েকটি কার্যকরী উপায় দেখাব। ইউটিউবে ভিউ এবং এঙ্গেজমেন্ট বৃদ্ধি করার জন্য কিছু কার্যকরী কৌশল এখানে দেওয়া হলো
১। উচ্চমানের কনটেন্ট তৈরি
- মানসম্মত ভিডিও: পরিষ্কার ভিডিও কোয়ালিটি, ভাল অডিও এবং প্রফেশনাল এডিটিং নিশ্চিত করবেন।
- আকর্ষণীয় কনটেন্ট: দর্শকদের জন্য আকর্ষণীয় এবং দরকারী কনটেন্ট তৈরি করবেন যা তাদের আগ্রহ ধরে রাখবে্ন।
২। ভিডিও এসইও
- কিওয়ার্ড রিসার্চ: ভিডিওর টাইটেল, ডেসক্রিপশন এবং ট্যাগে প্রাসঙ্গিক কিওয়ার্ড ব্যবহার করবেন।
- ডেসক্রিপশন: বিস্তারিত এবং কিওয়ার্ড-সমৃদ্ধ ডেসক্রিপশন লিখো যা ভিডিওর বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা করবেন।
৩। থাম্বনেইল এবং টাইটেল
- আকর্ষণীয় থাম্বনেইল: চমৎকার ও চোখে পড়ার মতো থাম্বনেইল ডিজাইন করতে হবে যা দর্শকদের ক্লিক করতে উদ্বুদ্ধ করবে।
- ইনফরমেটিভ টাইটেল: টাইটেল এমনভাবে লিখতে হবে যাতে এটি ভিডিওর মূল বিষয় পরিষ্কারভাবে বোঝায় এবং দর্শকদের আকর্ষণ করে।
৪। সোশ্যাল মিডিয়া প্রচার
- শেয়ারিং: ভিডিওগুলো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করতে হবে এবং বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ ও কমিউনিটিতে প্রচার করতে হবে।
- ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুক ও টুইটার: এই প্ল্যাটফর্মে প্রোমোশন করে ভিডিওর লিঙ্ক শেয়ার করতে হবে এবং দর্শকদের ভিডিও দেখার জন্য উৎসাহিত করবেন।
৫। অডিয়েন্সের সাথে যোগাযোগ
- কমেন্টের উত্তর: দর্শকদের মন্তব্য এবং প্রশ্নের উত্তর দিবেন।
- লাইভ স্ট্রিমিং: লাইভ ভিডিও স্ট্রিমিং করে দর্শকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করার চেষ্টা করবেন।
৮। ইন-ভিডিও এনগেজমেন্ট
- এন্ডস্ক্রিন এবং কার্ডস: ভিডিওর শেষে এন্ডস্ক্রিন ও কার্ডস ব্যবহার করে অন্যান্য ভিডিও এবং সাবস্ক্রিপশন প্রমোট করবেন।
- কল টু অ্যাকশন: ভিডিওর মাঝে দর্শকদের লাইক, কমেন্ট এবং সাবস্ক্রাইব করার জন্য উৎসাহিত করবেন।
৯। এনালিটিক্স বিশ্লেষণ
- পারফরম্যান্স ট্র্যাকিং: ইউটিউব অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে ভিডিওগুলোর পারফরম্যান্স ট্র্যাক করবেন।
- ডেটা বিশ্লেষণ: ভিডিও কোন অংশে ভালো পারফর্ম করছে এবং কোন অংশে সমস্যা হচ্ছে তা বিশ্লেষণ করবেন।
.১০। ট্রেন্ডিং কনটেন্ট
- নতুন ট্রেন্ড: বর্তমান ট্রেন্ড এবং হট টপিক নিয়ে কনটেন্ট তৈরি করবেন যা দর্শকদের আগ্রহ বাড়াবে।
উপরোক্ত সকল বিষয়গুলো অনুসরণ করার চেষ্টা করবেন কেননা আপনার ভিডিওর ভিউ এবং এঙ্গেজমেন্ট বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার ইউটিউব চ্যানেলটি আরও জনপ্রিয় হবে। ইউটিউবের অ্যালগোরিদম নিয়মিত আপডেট হতে থাকে। তাই আপনাকেও আপনার কৌশলগুলো নিয়মিত আপডেট করতে হবে।
ইউটিউব পলিসি এবং গাইডলাইন (YouTube Policies and Guidelines)
ইউটিউব একটি বিশাল প্ল্যাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন ধরনের কনটেন্ট তৈরি এবং ভাগ করা হয়। এই প্ল্যাটফর্মটি সবার জন্য নিরাপদ এবং উপভোগ্য রাখার জন্য ইউটিউব কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম বা গাইডলাইন নির্ধারণ করেছে। এই নিয়মগুলি অনুসরণ করা আপনার চ্যানেলকে নিরাপদ রাখতে এবং আপনার কনটেন্টকে আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে সাহায্য করবে।
ইউটিউবের পলিসি এবং গাইডলাইনস অনুসরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি আপ্চ্যনার নেলের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এবং ইউটিউব কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখতে সাহায্য করে। এখানে ইউটিউবের কিছু মূল পলিসি ও গাইডলাইনস তুলে ধরা হলো
১। কমিউনিটি গাইডলাইনস
- অপব্যবহার এবং হেনস্থা: সহিংসতা, হেনস্থা, ঘৃণা ভাষা, এবং নিপীড়নমূলক কনটেন্ট আপলোড করা নিষিদ্ধ।
- প্রাইভেসি: ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ বা কনটেন্টের মাধ্যমে অন্যদের গোপনীয়তা লঙ্ঘন করা নিষেধ।
- অসামাজিক আচরণ: ব্ল্যাকমেইল, অশ্লীল বা যৌনভাবে অসঙ্গত কনটেন্ট, এবং কিশোরদের জন্য ক্ষতিকর কনটেন্ট নিষিদ্ধ।
২। অথর কপিরাইট নীতিমালা
- কপিরাইট পলিসি: কপিরাইট-অভিযুক্ত কনটেন্ট ব্যবহার করা যাবে না। যদি অন্যের কনটেন্ট ব্যবহার করতে হয়, তাহলে যথাযথ অনুমতি নিতে হবে।
- ফেয়ার ইউজ: কিছু ক্ষেত্রে, নির্দিষ্ট পরিমাণে কপিরাইটেড কনটেন্ট ফেয়ার ইউজ নীতির অধীনে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এটি একটি জটিল আইনগত বিষয় এবং এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া উচিত।
৩। বিজ্ঞাপন ও মনিটাইজেশন
- মোনিটাইজেশন নীতিমালা: বিজ্ঞাপন দ্বারা আয় অর্জনের জন্য কনটেন্টের সুরক্ষিত এবং উপযুক্ত হতে হবে। পর্নোগ্রাফি, ঘৃণা ভাষা, এবং সহিংস কনটেন্ট বিজ্ঞাপনের জন্য উপযুক্ত নয়।
- ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রাম: চ্যানেলটি ইউটিউব পার্টনার প্রোগ্রামের অংশ হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে যেমন 1000 সাবস্ক্রাইবার এবং 4000 ঘণ্টা দর্শন সময়।
৪। সফটওয়্যার এবং হ্যাকিং
- ম্যালওয়্যার এবং ফিশিং: ম্যালওয়্যার, ভাইরাস, বা ফিশিং স্কিমের মাধ্যমে ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রচার করা নিষিদ্ধ।
- অথরাইজড অ্যাক্সেস: অন্যের অ্যাকাউন্ট বা প্ল্যাটফর্মে অবৈধভাবে প্রবেশ বা অ্যাক্সেস চেষ্টা নিষিদ্ধ।
৫। স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা
- স্বাস্থ্য সতর্কতা: ভিডিওতে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ভুল বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান করা যাবে না।
- বিপদজনক আচরণ: বিপদজনক বা ক্ষতিকর আচরণ, যেমন স্ব-অভিযান, সহিংসতা বা ঝুঁকিপূর্ণ কাজের ভিডিও আপলোড করা যাবে না।
৬। ডেটা প্রাইভেসি
- ডেটা সংগ্রহ: দর্শকদের অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ। ইউটিউবের ডেটা ব্যবস্থাপনা নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকতে হবে।
৭। ইউটিউব চ্যানেল অপারেশন
- অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনা: একাধিক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা করতে পারো, তবে এগুলোর মধ্যে কোনো ধরনের স্প্যাম কার্যকলাপ করা যাবে না।
- ফেক বা মিথ্যা তথ্য: ফেক নিউজ বা মিথ্যা তথ্য প্রচার করা নিষিদ্ধ।
৮। কন্টেন্ট পলিসি
- কনটেন্ট লাইসেন্সিং: কনটেন্ট আপলোড করার সময় লাইসেন্সিং এবং কপিরাইট বিষয় নিশ্চিত করো।
- ইউটিউবের পলিসি এবং গাইডলাইনস সময় সময়ে আপডেট হতে পারে, তাই নিয়মিতভাবে ইউটিউবের কমিউনিটি গাইডলাইনস এবং কপিরাইট নীতিমালা পর্যালোচনা করা উচিত। এটি তোমার চ্যানেলকে সুরক্ষিত রাখবে এবং ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করবে।
ভবিষ্যতে আপনার চ্যানেলটিকে গ্রো করতে এবং সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য অবশ্যই ইউটিউব এর উপরোক্ত পলিসি এবং গাইডলাইন আপনাকে অনুসরণ করতে হবে। অন্যথায় কোন ব্যক্তি যদি এগুলোকে অবজ্ঞা করে তাহলে পরবর্তীতে তার চ্যানেলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এমনকি একটা সময় পর তার চ্যানেল নষ্ট হয়েও যেতে পারে। এজন্য উপরোক্ত বিষয়গুলো প্রত্যেক ইউটিউবারে খেয়াল রাখতে হবে।
লেখকের শেষ মন্তব্য
এতক্ষণে, আপনি ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য প্রয়োজনীয় ধাপগুলি জেনে গেছেন। এখন আপনার কন্টেন্ট তৈরির যাত্রা শুরু করার পালা! চ্যানেলের সফলতা নির্ভর করে ধারাবাহিকতা ও মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরির উপর। মনে রাখবেন, ধৈর্য ধরে কাজ করলে সফলতা আসবেই।
কোনো প্রশ্ন থাকলে বা সাহায্য প্রয়োজন হলে কমেন্টে জানাতে পারেন। আপনার চ্যানেলের জন্য শুভকামনা! আর এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।
মর্ডান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url