হজম শক্তি বৃদ্ধির ১৭টি উপায় জেনে নিন ২০২৪

কোন ব্যক্তির যদি হজম শক্তি স্বাভাবিক থাকে, তাহলে তার কাছে যেকোনো সুস্বাদু খাবার খাওয়ার মজাটাই আলাদা থাকে । কিন্তু হজম শক্তি যদি স্বাভাবিক অবস্থায় না থাকে তাহলে তার কাছে যে কোন ভালো খাবারই খাওয়ার পর সে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে । 
হজম শক্তি বৃদ্ধির ১৭টি উপায় জেনে নিন
তাই আপনি যদি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে । কেননা আজকের পোস্টটিতে কিভাবে আপনি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব । তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক ।

কেন আপনি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবেন

হজম না হওয়ার কারণে অনেকে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় । বর্তমানে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের মজাদার যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা হয় । 

যার কারণে অনেকেই খাবার হজম করার জন্য অনেক ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকে । কিন্তু খাবার হজম করার জন্য ওষুধ খাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই । 

ওষুধের পরিবর্তে আপনি ঘরোয়া উপায়ে এমন কিছু করেন যার কারণে আপনার ওষুধের প্রয়োজন হবে না। আপনি চাইলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে পারবেন ।

সুন্দর সুস্থ সবল স্বাস্থ্যের জন্য হজমের গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা প্রত্যেক ব্যক্তি প্রতিনিয়ত অনেক খাবার খেয়ে থাকে সেগুলো যদি হজম না হয়, তাহলে উক্ত ব্যক্তির পেটের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হবে। 


যার কারণে সেই ব্যক্তি পরবর্তী সময়ে যে কোন বড় ধরনের বিপদের সম্মুখীন হতে পারে। প্রত্যেক ব্যক্তির হজম শক্তি এক নয় । কেননা অনেকেই আছে যারা যেকোনো ধরনের খাবার খাওয়ার পর সেটা হজম করে ফেলে, কিন্তু ওই একই খাবার অন্যজন খেয়ে তা হজম করতে পারে না । 

আর এই হজমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করার কারণে শরীরের মধ্যে ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতার মতো সমস্যা দেখা দেয় । 

এছাড়াও এই সমস্যার জন্য অনেক সময় দেখা যায় যে আপনি বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার পরও আপনার শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি পান না । এজন্য পুষ্টিবিদদের মতে খাবারের হজম বৃদ্ধি করতে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে । নিচে কিভাবে আপনি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো ।

লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে কি হবে জেনে নিন

সাধারণত মানুষ পুষ্টির জন্য খাবার গ্রহণ করে থাকে কিন্তু সে খাবারটি যদি হজম না হয় তাহলে পুষ্টি পাওয়া অসম্ভব। যখন শরীরে হজম শক্তি কমে যায় তখন শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রয়েছে পুষ্টির ঘাটতি, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিনের অভাব, ফোলা ভাব গ্যাস এবং জন্ডিস ইত্যাদি আরো অনেক সমস্যা দেখা দিতে পারে। হজম শক্তি কমে গেলে যে সকল সমস্যা সৃষ্টি হবে তা নিচে আলোচনা করা হলো
  • জন্ডিস
  • অপুষ্টি
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • ডায়রিয়া
  • পেটে ব্যথা বা ফোলা ভাব
  • পিত্ত পাথর
  • ওজন বৃদ্ধির
  • লিভারের বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া
১। জন্ডিস
যদি লিভার সঠিকভাবে কাজ না করে তবে জন্ডিস রক্তে বিলিরুবিন তৈরি করতে পারে, যার ফলে আমাদের মধ্যে অনেক সময় দেখা যায় যে অনেকের ত্বক, চোখ হলুদ হয়ে যায়। যা আমাদের মধ্যে জন্ডিস নামে পরিচিত। শক্তি কমে গেলে এই জন্ডিস নামক রোগটি দেখা দিবে।

২। অপুষ্টি
শরীরে যখন হজম শক্তি কমে যায়, তখন শরীরে ঠিক আগের মত ততটা কার্যকর ভাবে খাদ্য থেকে পুষ্টি গ্রহণ করতে পারে না এর ফলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি ও ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দেখা দেয়। এজন্য হজম শক্তি কমে গেলে শরীরের মধ্যে অপুষ্টির লক্ষণ দেখা দিবে।

৩। কোষ্ঠকাঠিন্য
অনেক সময় হজমের সমস্যা পরিপাকতন্ত্রের মাধ্যমে খাবারের চলাচলকে স্থির করে দিতে পারে যার ফলে অনেকের মধ্যে দেখা যায় কোষ্ঠকাঠিন্যর মতো রোগ। এজন্য হজমে সমস্যা থাকলে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগের সৃষ্টি হবে।

৪। ডায়রিয়া
হজমে ব্যাঘাত ঘটার ফলে আপনি যে সকল খাবার গ্রহণ করবেন সেগুলো পেটের মধ্যে গিয়ে অনেক সমস্যা তৈরি করতে পারে, এমনকি ডায়রিয়া ও হতে পারে যা খাবারের অসম্পূর্ণ হজম বা অন্ত্রে ব্যাকটেরিয়ার অতিরিক্ত বৃদ্ধির কারণ।

৫। পেটে ব্যথা বা ফোলা ভাব
লিভারে হজম শক্তি কমে গেলে পেটের মধ্যে সাধারণভাবে বলা যায় যে পেট ফুলে যাবে এবং পেটে ব্যথা সৃষ্টি হবে ।

৬। পিত্ত পাথর
যকৃতে যখন সমস্যা হয় অর্থাৎ অনেক সময় দেখা যায় যে যকৃত পর্যাপ্ত পরিমাণ পিত্ত উৎপাদন করতে পারে না, তখন এটি পিত্ত পাথর গঠনের দিকে নিয়ে যেতে পারে যার ফলে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা ও অন্যান্য হজমের ক্ষেত্রে ব্যাঘাত ঘটতে পারে ।

৭। ওজন বৃদ্ধি
যখন শরীরে সঠিকভাবে খাবার হজম করতে ব্যর্থ হয়ে যায় তখন শরীরের মধ্যে অতিরিক্ত ক্যালরি চর্বি হিসাবে জমা হয় যার ফলে ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যায়।

৮। লিভারের বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া
যদি লিভার সঠিকভাবে কাজ না করে, তবে এটি লিভারের রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, মিয়োসিস এবং লিভার ক্যান্সার । 

লিভারের হজম শক্তি সাধারণ ভাবে মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে এজন্য এ সকল সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য ভালোভাবে হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে । নিচে কিভাবে আপনি হজম শক্তি বৃদ্ধি করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে ।

হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায়

প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে সুস্বাস্থ্যের জন্য হজম শক্তি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। কেননা এই হজম শক্তি যদি কমে যায় কিংবা এ হজম শক্তিতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে আপনার পুরো শরীর স্থির হয়ে পড়বে । 

এমনকি আপনার এই হজম শক্তির সমস্যার কারণে আপনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন । সাধারণ হজম শক্তি প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন হয়ে থাকে । 


তার মধ্যে অনেকে আছে যাদের ঠিকমতো হজম হয় না, তারা যদি নিয়মিত অর্থাৎ সময়মতো খাবার গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম এবং কিছু নিয়ম অনুসরণ করে তাহলে অবশ্যই সে সফল ব্যক্তিদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে । 
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এ হজম শক্তি বৃদ্ধির ১৭টি উপায় 

১। শারীরিক ব্যায়াম
হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য আপনি যেকোনো ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন না। কেননা হজম শক্তির সঙ্গে সংযুক্ত অঙ্গ হলো ডায়াফ্রাম এর ওপর থেকে শুরু করে নিচ পর্যন্ত । 

এ সকল অঙ্গগুলোকে ব্যায়ামের মাধ্যমে সচল রাখতে পারলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে । শরীরের মাঝের অংশের কর্মকাণ্ড বাড়াতে হলে বিশেষ ধরনের ব্যায়াম করতে হবে আপনাকে । 


উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে টুইস্টিং পদ্ধতি অর্থাৎ শরীরের উপরের অংশ একদিকে এবং নিচের অংশ আরেকদিকে থাকে সেক্ষেত্রে হজম প্রক্রিয়া ভালো হয় । এছাড়াও আপনি শুয়ে ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে দুই পা উঁচু করে রাখতে পারেন এবং পা দুটির চক্র আকারে অর্থাৎ বাম থেকে ডানে এবং ডান থেকে ঘোরাতে পারেন। 

এই ব্যায়াম টি আপনাকে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে । এছাড়াও আপনি জগিং করতে পারেন অর্থাৎ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে হালকা করে লাফাতে পারেন যা আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করবে।

২। খাবার অর্থাৎ সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া
হজম শক্তির ক্ষেত্রে খাবার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ কেননা এই খাবারের কারণেই হজম শক্তিতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হয়। 

তাই অপুষ্টিকর এবং ক্ষতিকারক খাবার না খাওয়াটাই উত্তম । প্রত্যেক ব্যক্তি খাবার খাওয়ার সময় অবশ্যই একটা জিনিস মনে রাখতে হবে সেটি হচ্ছে খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেতে হবে, অর্থাৎ যে ব্যক্তি যত ভালো হবে খাবার চিবিয়ে খাবে, তাহলে তার পাচকরস নিঃসরণ ততো ভাল হবে । 

এবং যেকোনো ধরনের খাবার খাওয়ার পর খাওয়ারের শেষে লেবু খাওয়া। কারণ লেবু বিভিন্ন ধরনের খাবার হজম করতে সহায়তা করে। এজন্য হজম শক্তি বৃদ্ধি করবে এমন খাবার বেশি খাওয়া। 

উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে আপনি খাবার খাবার পর দই খেতে পারেন। কারণ দই হজম শক্তির বৃদ্ধির জন্য লেবুর মত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৩। পর্যবেক্ষণ
প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত সব সময় পর্যবেক্ষণ করা যে প্রতিনিয়ত আপনি যে সকল খাবারগুলো খাচ্ছেন সেগুলো কি ধরনের খাবার অর্থাৎ সে খাবারগুলো আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করবে কি না । যদি তেমন হয় তাহলে সে সকল খাবার থেকে বিরত থাকা ।

হজম শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সবার জন্য এক নয়। কেননা এটি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি তারতম্য অর্থাৎ এক এক ব্যক্তির একেক রকম হজম শক্তি হয়ে থাকে । উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে একজন ব্যক্তি একটি খাবার খেয়ে হজম করে ফেলে কিন্তু সেই খাবারটি অন্য আরেকজন ব্যক্তি খেয়ে হজম করতে পারে না । 

এজন্য একেক ব্যক্তি ক্ষেত্রে একেক রকম হজম শক্তি থাকে । তাই বলা যেতে পারে যে আপনি যখন কোন খাবার গ্রহণ করবেন তখন সেটি ধীরে ধীরে সে খাবারটি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করবেন । 


উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে অনেকের ক্ষেত্রে দুধ বা অনেক খাবার আছে যেগুলো হজম করতে অনেক সমস্যা হয়। সেক্ষেত্রে আপনি এই খাবারটি একেবারে বাদ না দিয়ে ধীরে ধীরে এ খাবারের পরিমাণটা আপনি বাড়াতে পারেন তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনার হজমে কোন সমস্যা সৃষ্টি করবে না । 

এছাড়া অনেক সময় ভিটামিনের অভাবে হজম শক্তি দুর্বল হয়ে যেতে পারে । তার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিনযুক্ত খাবার গ্রহণ করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন ।

৪। হোল গ্রেন
হোল গ্রেন বলতে সাধারণত খোসা যুক্ত শস্য বা গোটা শস্য কে বোঝায়। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে হোল-গ্রেন খেলে খুব তাড়াতাড়ি পেট ভরে যাওয়ার অনুভূতি তৈরি হয়। যার কারণে একজন ব্যক্তি অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলা থেকে বেঁচে যাই। 

অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলার মাধ্যমে শরীরে অনেক ধরনের সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে এজন্য হোল গ্রেন খেতে পারেন। এটি খাবার ফলে আপনার পছন্দের কোনো খাবার অতিরিক্ত পরিমাণ খেয়ে ফেরার সমস্যা থেকে বিরত থাকবেন । 

সাধারণত হোল গ্রেন বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ই, জিঙ্ক, এবং নিয়াসিন এর মতো উপাদান যা ক্যান্সার ও হৃদরোগের সমস্যার থেকে মুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।

৫। আদা
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে খাবার খাওয়ার পর যদি শুকনো আদা কোন ব্যক্তি খায়, তাহলে তার হজম ক্ষমতা খুব দ্রুত বেড়ে যায় । এছাড়াও আদার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি সর্দি-কাশির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । 

তাই আপনি খাওয়ার পর শুকনো আদার গুঁড়ো, হলুদ, এবং মধু দিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে খেলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে । পেটে বিভিন্ন ধরনের ব্যথা এবং গ্যাসের সম্মুখীন হলে অবশ্যই আপনি আদা খাবেন। 

কেননা চিকিৎসা বিজ্ঞান আদাকে ভেজোস ওষুধ হিসাবে ব্যবহার করে থাকে । তাই হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য আদা খেতে পারেন ।

৬। পুদিনাপাতার রস বা গ্রিন টি পান করা
পুদিনা পাতার রস বা গ্রিন টি পান করা প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে উপকারী । কেননা এই পুদিনা পাতার রস আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । 

এছাড়াও এর অনেক উপকারিতা রয়েছে এটির শরীরের বিভিন্ন ধরনের সর্দি, কাশি, এসিডিটি, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । 

এছাড়াও পুদিনা পাতার রস শরীরের বিভিন্ন ধরনের ক্লান্তি ভাব দূর করতে এবং মেজাজ ভালো রাখতে সহায়তা করে থাকে । এজন্য বলা যায় যে আপনি আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে পুদিনা পাতার রস খেতে পারেন ।

৭। পরিমাণ মতো পানি পান করা
সাধারণত পরিবর্তন তো সচল রাখার জন্য পানির গুরুত্ব অপরিসীম । পানি হজমের জন্য সেরা তরল হিসেবে ধরা হয় । কিন্তু আপনি জুস, সুপ অথবা চাও পান করতে পারেন।

৮। পর্যাপ্ত ঘুম বা বেশি রাত না জাগা
স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের মতে বেশি রাত জাগা, হজমের ক্ষেত্রে একটি মারাত্মক প্রভাব সৃষ্টি করে থাকে। কেননা রাতের বেলায় সাধারণত অক্সিজেন এর পরিমাণ কম থাকে কারণ রাতের বেলায় সালোকসংশ্লেষণ হয় না । এজন্য রাতের বেলায় অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় । 

আরে এই অক্সিজেনের পরিমাণ কম থাকার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসে অনেক সময় সমস্যা দেখা দেয় অর্থাৎ পুরোপুরি শ্বাস নেওয়া সম্ভব হয় না । এছাড়া রাত জাগার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ কাজ করে। যার ফলে শরীরের মধ্যে অধিক পরিমাণ অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। 

কিন্তু রাতের বেলায় সেই পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন থাকে না । যার ফলে হজম শক্তিতে বিঘ্ন ঘটে এজন্য বেশি রাত না জাগা । সময়মতো ঘুমিয়ে পড়া । কারণ সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান ঘুম অত্যন্ত জরুরী।

৯। শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম
শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কতটা ভালোভাবে কাজ করবে, তা নির্ভর করে শরীরের পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন কতটুকু আছে তার ওপর অর্থাৎ শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ উপর ব্যক্তির কাজের সর্বোচ্চ তা নির্ভর করে । 

এছাড়াও হজম বা শোষণের জন্য অক্সিজেনের কোন বিকল্প নেই । এজন্য শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করাটা অত্যন্ত জরুরী । তাই আপনি নাক দিয়ে লম্বা করে শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে লম্বা করে শ্বাস ছাড়লে দেহে অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যাবে । যার ফলে আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

১০। ধূমপান থেকে বিরত থাকা
ধূমপান অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে কেননা অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে ফুসফুসে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয় । 

অনেকেই বিভিন্ন ধরনের নেশায় জড়িত থাকে উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে সিগারেট, কফি এছাড়া অনেকেই অনেক ধরনের নেশা করে থাকে। এই নেশার কারণে হজমে বিভিন্ন ধরনের ব্যাঘাত ঘটে। এজন্য নেশা ছাড়তে পারলে শরীর ও পতনতন্ত্র ঠিক থাকবে।

১১। বিভিন্ন ধরনের ফল
ফলের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন রয়েছে যেগুলো শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে আপেল সিদ্ধ করে সেই আপেলের রস খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। 

এবং এটি যদি আপনি নিয়মিত খান তাহলে বিভিন্ন ধরনের বদ হজম দূর হয়ে যাবে। এজন্য বলা যায় যে হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য আপনি পুষ্টিকর জাতীয় ফল খেতে পারেন।

১২। জিরার গুঁড়ো খাওয়া
হজমশক্তি বৃদ্ধির জন্য জিরার গোড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেননা জিরার গুড়া পানিতে মিশিয়ে গরম করে খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় এছাড়াও এটি পেটের বিভিন্ন ধরনের চর্বি দূর করতে সাহায্য করে ।

১৩। পেপে পাতা
হজম ক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পেঁপে পাতা সহায়ক হিসেবে কাজ করে থাকে । কোন ব্যক্তি যদি নিয়মিত পেপে পাতা সিদ্ধ করে পানি খায় তাহলে সে ব্যক্তি হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে এবং তার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবে। এজন্য আপনি হজম শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে পেপে পাতা খেতে পারেন।

১৪। এলাচ
সাধারণত আমাদের বাসায় রান্নায় ভালো সুবাসের জন্য এলাচ ব্যবহার করা হয়ে থাকে । কিন্তু এলাচ বিভিন্ন ধরনের খাবার হজম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । 

এলাচের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের উপাদান রয়েছে যা গ্যাস এবং বদ হজমের ক্ষেত্রে সহায়তা করে থাকে। এছাড়াও মুখের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের দুর্গন্ধ এবং পেটের মধ্যে আলসার থেকে মুক্তির জন্য এলাচ খেতে পারেন । 

আপনি যেকোনো ধরনের খাবার খাওয়ার পর এলাচের কিছু দানা নিয়ে সেগুলো খেতে পারেন। যার ফলে আপনার যেকোনো ধরনের খাবার হজম করার ক্ষেত্রে এলাচ সাহায্য করবে । এবং আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকবে ।

১৫। মৌরি
মৌরি খালি পেটে পান করলে এটি বিভিন্ন ধরনের গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যা দূর করে থাকে । যার ফলে বিভিন্ন ধরনের খাবার হজম করতে সহায়তা করে। এবং মৌরি সাধারণত মুখসুদ্ধি হিসেবে কাজ করে থাকে । এছাড়াও মৌরি অনেক উপকারিতা রয়েছে। 

১৬। মিছরি
মিছরি অনেক উপকারিতা রয়েছে। কোন ব্যক্তির যদি মিছরি পানির মধ্যে বা এমনি পান করলে তা পেটের জন্য অনেক উপকারী । এটি হজম শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করে । এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন ঠান্ডা লাগলে মিছরি খেলে শরীরের মধ্যে এক ধরনের শক্তি পাওয়া যায়।

১৭। শাকসবজি খাওয়া
হজমের সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য এবং হজমের শক্তি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে নিয়মিত শাকসবজি খেতে পারেন। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বলে যে হজমের শক্তি দূর করতে হলে আঁশযুক্ত খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হবে ।

এই পোস্টটি সম্পর্কে লেখক এর শেষ মন্তব্য

প্রিয় পাঠক আশা করি আমাদের পোস্টটি পোস্ট সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং আজকের পোস্টটি হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় অর্থাৎ আপনি আপনার হজম শক্তি কিভাবে বাড়াবেন সে সমস্ত বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । 

এরপরও যদি আপনার কোন সমস্যা বা কোন প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন । 

এবং আজকের পোস্টটি ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন কেননা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত তথ্য ও জ্ঞানমূলক পোস্ট করে থাকি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

মর্ডান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url