নবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে What is Renewable Energy
নবায়নযোগ্য শক্তি হলো এমন একটি শক্তি যেটি বারবার ব্যবহার করা যায় অর্থাৎ এটি একবার ব্যবহার করার ফলে নিঃশেষ হয়ে যাবে না। এটি এমন একটি শক্তি যেটি আপনি বারবার ব্যবহার করতে পারবেন এই শক্তিটা কখনো শেষ হবে না।
তাই আপনি যদি নবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে এবং নবায়নযোগ্য শক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে । কেননা আজকের পোস্টটিতে আমরা নবায়নযোগ্য শক্তি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব । তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক ।
ভূমিকা
প্রত্যেক ব্যক্তি তার জীবনের নিত্যপ্রয়োজনে বিভিন্ন কাজের সাথে জড়িত থাকে, যার কারণে তার শক্তির প্রয়োজন হয় । ব্যক্তি কখনো শক্তি ব্যবহার করে, কখনো অর্জন করে, আবার কখনো খরচ করে থাকে ।
সাধারণত পৃথিবীতে কোন শক্তি ধ্বংস হয় না , শক্তির একটি রূপ থেকে আরেকটি রূপে পরিবর্তন হয়। নবায়নযোগ্য শক্তি হলো এমন একটি শক্তি যে শক্তি যা প্রকৃতিতে অফুরন্তভাবে পাওয়া যায় যে শক্তি কোনদিনই নিঃশেষ হয়ে যাবে না।
এবং অপরদিকে যে সকল শক্তি শক্তিগুলোর উৎস ধ্বংস হয়ে যায় অর্থাৎ শেষ হয়ে যায় , যা আপনি পুনরায় ব্যবহার করতে পারবেন না, সেই সকল শক্তিগুলোকে অনবায়নযোগ্য শক্তি বলা হয় । জীবাশ্ম জ্বালানি হচ্ছে অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎস ।
অর্থাৎ জীবাশ্ম জ্বালানিকে অনবায়নযোগ্য শক্তি হিসেবে ধরা হয় কারণ জীবাশ্ম জ্বালানি পৃথিবীতে সীমাবদ্ধ । এটি একটা সময় পর গিয়ে শেষ হয়ে যাবে, তাই বর্তমানে মানুষ এখন নবায়নযোগ্য শক্তির ওপর নির্ভরশীল । কেননা এই শক্তিটা কখনো শেষ হবে না, সব সময় প্রকৃতিতে বিদ্যমান থাকবে ।
নবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে (What is Renewable Energy )
পুনরায় ব্যবহার করা যায় এমন শক্তি অর্থাৎ যে শক্তি এমন এক ধরনের উৎস থেকে তৈরি হয় যে উৎস সময়ের সাথে সাথে কখনো শেষ হবে না , প্রকৃতিতে চিরকাল বিরাজ করবে । সাধারণত সে সকল শক্তিকে নবায়নযোগ্য শক্তি বলে ।
নবায়নযোগ্য শক্তি হচ্ছে অসীম বা অফুরন্ত শক্তি, যা কখনোই শেষ হবে না । এই সকল শক্তি বিনা খরচে পাওয়া যায় । পৃথিবীর অধিকাংশ নবায়নযোগ্য শক্তি, কোন না কোনোভাবে সূর্য থেকে আসে । সূর্য হচ্ছে নবায়নযোগ্য শক্তির অন্যতম একটি প্রধান উৎস হিসেবে ধরা হয় ।
যুক্তরাষ্ট্রের Environmental Protection Agency (এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি) এর মতে,
“Energy derived from natural resources that can be replenished in a relatively short period of time, such as solar, wind, geothermal, and hydroelectric power.” অর্থাৎ " ( প্রাকৃতিক সম্পদ থেকে প্রাপ্ত শক্তি যা তুলনামূলকভাবে স্বল্প সময়ের মধ্যে পূরণ করা যায়, যেমন সৌর, বায়ু, ভূতাপীয় এবং জলবিদ্যুৎ শক্তি ) "
নিচে ১২টি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস নিয়ে আলোচনা করা হলো ঃ
- জলবিদ্যুৎ
- সমুদ্র তরঙ্গ
- সমুদ্র তাপ
- বায়োমাস
- বায়ো ফুয়েল
- সূর্যের আলো
- বায়ু প্রবাহ
- জলপ্রবাহ
- জৈবশক্তি
- ভূতাপীয় বা জিওথার্মাল শক্তি
- জোয়ার ভাটা
- হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল
সৌরশক্তি এক ধরনের পরিষ্কার পুনর নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎস যা একমাত্র সূর্যের আলো এই শক্তি তৈরি করে । সৌরশক্তি ব্যবহার করার ফলে গরম, জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সরবরাহ এমনকি যানবাহন চালানোর ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে ।
বিভিন্ন গবেষকদের মতে জানা যায় যে এক বর্গ কিলোমিটার এলাকায় সূর্য থেকে আলো ও তাপ হিসেবে প্রায় হাজার মেগাওয়াট শক্তি পাওয়া যায়। যা একটা নিউক্লিয়ার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের শক্তির কাছাকাছি।
সৌরশক্তি ঘর গরম এবং আলোকিত করার কাজে ব্যবহার করা হয় । এছাড়াও বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং বাণিজ্যিক ও শিল্প কলকারখানার কাজে ব্যবহার করা হয় । সূর্যের বিকিরণ থেকে তৈরি কৃত শক্তি প্যানেল বা সৌরতাপ সংগ্রাহক দ্বারা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে ।
সূর্য যা সৌরজগতের একটি অন্যতম নক্ষত্র । সূর্যকে দেখতে অনেকটা একটি বিশাল গ্যাসীয় পিন্ডের মতো । সূর্যের কেন্দ্রে ফিউশন নামক বিক্রিয়ার ফলে, বিশাল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয় যা আলো ও তাপ শক্তি হিসাবে পৃথিবীতে পৌঁছায় ।
সূর্য থেকে আলো কিংবা তাপ আসে যা বিদ্যুতে রূপান্তর করার জন্য আরো একধাপ অতিক্রম করার প্রয়োজন হয় । তারপর এই শক্তিটাকে আমরা বিদ্যুৎ হিসেবে বা সৌরশক্তি অর্থাৎ সোলার সিস্টেম হিসেবে পেয়ে থাকি ।
সৌরশক্তি হচ্ছে একটি নির্ভরযোগ্য শক্তির উৎস কারণ সূর্য থেকে এই শক্তি আমরা পেতে থাকবো এটা কখনোই শেষ হবে না । এজন্য সৌরশক্তিকে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসাবে ধরা হয় ।
২। জলবিদ্যুৎ
পৃথিবীতে মোট শক্তির পাঁচ ভাগের একভাগ হচ্ছে নবায়নযোগ্য শক্তি । আর সেই একভাগ শক্তির বেশিরভাগই হচ্ছে জলবিদ্যুৎ। বিভিন্ন জায়গায়, নদীতে বাধ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়ে থাকে । আর প্রকৃতিতে নদীর পানি কখনো ফুরিয়ে যায় না ।
তাই এই বিদ্যুতের উৎস নদী কখনোই ধ্বংস হবে না । যার কারণে জলবিদ্যুৎ উৎপন্ন হতেই থাকবে । এই জলবিদ্যুৎ তৈরি করতে নদীতে বাদ দেওয়া এটি একটি ক্ষতিকারক দিক হিসেবে ধরা হয়ে থাকে।
কেননা পৃথিবীর মানুষ অনেক সতর্ক হয়ে গেছে এই বাধ দেওয়ার ফলে পরিবেশের অনেক বড় ক্ষতি হয়। তাই যাদের একটু দুরদৃষ্টি আছে তারা এরকম জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করে না ।
উপরের উৎসগুলোকে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসাবে ধরা হয় । বর্তমানে আমাদের মাঝে বিদ্যুতের চাহিদা দিনের পর দিন বাড়তে আছে । বর্তমানে নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে বিদ্যুৎ তৈরি হচ্ছে।
যেমন হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল, যেখানে হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের বিক্রিয়া করে সরাসরি ডিসি কারেন্ট উৎপন্ন করা হয় । এবং বিভিন্ন ধরনের জলপ্রপাতের বেগ থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হচ্ছে।
৩। বায়োমাস
বায়োমাস বলতে সাধারণত লাকড়ি এবং খরকুটো এসবকে বোঝানো হয়। জলবিদ্যুতের পর সবচেয়ে বড় নবায়নযোগ্য শক্তি আসে বায়োমাস থেকে । পৃথিবীতে অনেক গ্রাম এলাকার মধ্যে মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক সময় তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, এগুলো পাই না ।
তখন তারা , তাদের জীবনের প্রয়োজনে লাকড়ি এবং খরকুটো জ্বালিয়ে অতিবাহিত করে থাকে । যদিও শুকনো গাছ কিংবা খরগোঁটো এগুলো পুড়িয়ে ফেললে শেষ হয়ে যায় ।
আরো পড়ুন ঃ রাতে ঘুমানোর আগে যে সকল আমল করবেন জেনে নিন ।
তারপরও বায়োমাস কে নবায়নযোগ্য শক্তি হিসেবে ধরা হয় কেননা নতুন করে আবার গাছপালা জন্মায়।যা ভবিষ্যতে আরো জন্মাবে তার কারণে এই খরকুটো কখনোই শেষ হবে না ।
৪। বায়ু শক্তি
সৌর শক্তির মতো বায়ু শক্তিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে ধরা হয় । কেননা ইউরোপের অনেক দেশগুলোতে টারবাইন যন্ত্রের সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয় । যা আমাদের দেশগুলোতে তেমন একটা দেখা যায় না ।
কিন্তু এগুলো ইউরোপের দেশগুলোতে অনেক ব্যয়বহুল । সাধারণত বায়ু বিদ্যুতের জন্য যে টারবাইন যন্ত্র ব্যবহার করা হয়, সে যন্ত্রটি বসানোর জন্য তেমন একটা জায়গা নষ্ট হয় না । যার ফলে পরিবেশের চারপাশে বসবাসকারী মানুষদের জন্য অনেক সুবিধা হয়।
সাধারণত একটা বায়ু টারবাইন থেকে কয়েক মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ পাওয়া সম্ভব । বর্তমানে এর ব্যবহার বেড়ে চলেছে প্রতিবছর এর ব্যবহার প্রায় 30% বৃদ্ধি পেয়ে থাকে । যার ফলে এই শক্তিটাকেও নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস হিসাবে ধরা হয় ।
৫। ভূতাপীয় বা জিওথার্মাল শক্তি
ভূতাপীয় বা জিওথার্মাল শক্তিকে নবায়নযোগ্য শক্তির অন্যতম শক্তি হিসেবে ধরা হয় । অনেক সময় পৃথিবীর ভেতরের অংশ আগ্নেয়গিরির দিয়ে যখন সেটি বের হয়ে আসে, তখন সবাই সেটা বুঝতে পারে।
এজন্য কেউ যদি কয়েক কিলোমিটার গর্ত করে রাখতে পারে তাহলে সেই ব্যক্তি তাপ শক্তির একটি বিশাল উৎস পেয়ে যাবে । সাধারণভাবে বলতে গেলে এই প্রক্রিয়াটি এতটা সহজ নয় । তাই এখনও ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা শুরু হয়ে ওঠেনি ।
হয়তো আগামী দিনগুলোতে এর ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে কিন্তু বর্তমানে খুব কম সংখ্যক লোক এই শক্তিটি ব্যবহার করে থাকে । আর প্রকৃতিতে এই শক্তিটাও ব্যাপক পরিমাণে রয়েছে এজন্য ভূতাপীয় বা জিওথার্মাল কে নবায়নযোগ্য শক্তি হিসেবে ধরা হয় ।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির গুরুত্ব
বর্তমানে অনেক শক্তি তুলনায় নবায়নযোগ্য শক্তির অনেক গুরুত্ব রয়েছে । নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস থেকে টেকসই এবং বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকারক গ্যাস যেমন গ্রিন হাউজ গ্যাস নির্গত হয় না ।
২০২০ সালে জার্মানিতে মোট শক্তি উৎপাদনের প্রায় ৫০ শতাংশ শক্তির উৎপন্ন হয় নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে যার মূল উৎস ছিল সৌর বিদ্যুৎ এবং বায়ু ।
তুরস্কের একজন তরুণ উদ্ভাবক কেরেম দেবচি ENLIL একটি বায়ু কল তৈরি করেন যার নাম দেওয়া হয় টারবাইন যা বিভিন্ন ধরনের যানবাহন থেকে তরিকৃত বাতাসকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করতে সক্ষম হয় । আর এ টারবাইন নামক যন্ত্রটি ২০২১ সালে তুরস্কের বিভিন্ন রাস্তায় স্থাপন করা হয় ।
অনবায়নযোগ্য শক্তি কাকে বলে
সহজ ভাষায় বলা যায় যে পৃথিবীতে যে শক্তি সীমিত পরিমাণে আছে অর্থাৎ যে সকল শক্তির উৎস একসময় শেষ হয়ে যাবে তাকে অনবায়নযোগ্য শক্তি বলে। পৃথিবীতে মোট শক্তির পাঁচ ভাগের চার ভাগ হচ্ছে অনবায়নযোগ্য শক্তি ।আর মাত্র এক ভাগ হচ্ছে নবায়নযোগ্য শক্তি ।
নিচে কিছু অনবায়নযোগ্য শক্তির উদাহরণ দেওয়া হলো
- নিউক্লিয়ার শক্তি
- খনিজ শক্তি
- কয়ল
- জীবাশ্ম জ্বালানী
- গ্যাস
- তেল
১। নিউক্লিয়ার শক্তি
পৃথিবীতে অনেক দেশ এখন এক ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করছে সে জ্বালানিটা হচ্ছে ইউরেনিয়াম । যা ইউরেনিয়াম নামক নিউক্লিয়ার শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই জ্বালানিটা পাওয়া যায় । বর্তমানে মাটির মধ্যে বিভিন্ন ধরনের তেল গ্যাস কয়লা পাওয়া যাচ্ছে ।
এবং এই তেল গ্যাস এবং কয়লার ইত্যাদি মাটির মধ্যে ইউরেনিয়াম কি পরিমানে আছে তা ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা খুব সহজেই অনুমান করে বের করে ফেলেছে ।
বিভিন্ন গবেষকদের মতে বর্তমানে পৃথিবীর মানুষ যে হারে এই অনবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করছে তার ফলে আজ থেকে বড়জোর দুইশত বছর পর এই সমস্ত শক্তি বিলুপ্ত হয়ে যাবে । কারণ অনবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করার ফলে শেষ হয়ে যায় ।
যা আপনি বারবার ব্যবহার করতে পারবেন না । কিন্তু এটা নিয়ে মানুষ এখন চিন্তিত নয় কারণ এখন উন্নত এবং ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা খুব সহজেই কোন একটা উপায় বের করে ফেলবে যার মাধ্যমে পৃথিবীতে সেই সকল শক্তিগুলো কোন উপায়ে তৈরি হয়ে যাবে ।
২। খনিজ শক্তি
আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগে মাটির নিচে বিভিন্ন ধরনের পদার্থ চাপা পড়ে যায় । আর এই চাপা পড়ে যাওয়া পদার্থ ও বর্তমানে মাটির ভিতর থেকে বিভিন্ন ধরনের খনিজ পদার্থ হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে ।
পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় শক্তির উৎস হচ্ছে তেল , গ্যাস এবং কয়লা । বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন গবেষণার ফলে এই মাটির নিচে চাপা পরে যাওয়া বিভিন্ন পদার্থ এখন খুব সহজেই পাওয়া যাচ্ছে ।
সাধারণত মাটির নিচ থেকে প্রাথমিক অবস্থায় যেই তেলটি পাওয়া যায় সেটি হচ্ছে ক্রুডওয়েল যা অনেক ঘন অবস্থায় থাকে । বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রিফাইন করার ফলে এই তেল পরবর্তীতে পেট্রোল ডিজেল এবং কেরোসিনের রূপান্তর করা হয় ।
এবং এগুলো তৈরি করতে গিয়ে এর সাথে অনেক পদার্থ বের হয়ে আসে যা ব্যবহারযোগ্য পদার্থ হিসেবে ধরা হয় । কিন্তু পৃথিবীতে এই শক্তিটি অফুরন্ত নয় । কেননা এই খনিজ শক্তি একদিন শেষ হয়ে যাবে তাই খনিজ শক্তিকে একটি অনবায়নযোগ্য শক্তি হিসেবে ধরা হয় ।
এই অনবায়নযোগ্য শক্তির একটি ক্ষতিকারক দিক রয়েছে । এই অনবায়নযোগ্য শক্তি মানুষ কর্তৃক তৈরি হয়ে থাকে । যা বিভিন্ন কল কারখানায় তৈরি হয় । আর এই শক্তিটি তৈরি হতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের দূষিত পদার্থ বের হয় যার ফলে পরিবেশ দূষণ হয় ।
নবায়নযোগ্য শক্তির সুবিধা
নবায়নযোগ্য শক্তি যা প্রকৃতিতে বর্তমানে অফুরন্ত রয়েছে এবং ভবিষ্যতেও কখনো তার কমতি হলে পুনরায় আবার পূরণ হয়ে যাবে । নবায়নযোগ্য শক্তির অনেক সুবিধা রয়েছে । নিচে সে সকল সুবিধাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো ।
- নিরাপত্তা সুবিধা
- পরিবেশগত সুবিধা
- অর্থনৈতিক সুবিধা
- সামাজিক সুবিধা
১। পরিবেশের জন্য সুবিধা
সাধারণত জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হিসেবে গ্রীন হাউজ গ্যাসকে ধরা হয়ে থাকে । আর এ গ্রিনহাউস গ্যাস বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে তাপমাত্রা বৃদ্ধি এছাড়াও অনেক কারণ রয়েছে ।
নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎসর মত অর্থাৎ জীবাশ্ম জ্বালানির মতো গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমন করে না । যার ফলে গ্রীন হাউজ গ্যাস বৃদ্ধি পায় না এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা থাকে ।
২। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুবিধা
নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়ন ও ব্যাপক ব্যবহারের ফলে অনেক কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে যার ফলে বেগারত্ব হ্রাস পাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে । ধীরে ধীরে নবায়নযোগ্য শক্তির শিল্প ক্রমবর্ধমানভাবে বড় এবং উদ্ভাবনী হয়ে উঠছে ।
৩। নিরাপত্তা সুবিধা
অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎস জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর এখন অনেক মানুষ নির্ভরশীল যার ফলে জ্বালানির দাম তুলনামূলকভাবে অনিশ্চয়তার ঝুঁকিতে পড়তে চলেছে । নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো অনেক বেশি সৃষ্টি করা হয় তাই জ্বালানির নিরাপত্তা বাড়াই ।
৪। সমাজের ক্ষেত্রে সুবিধা
নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার স্থানীয় যে সকল সম্পদ রয়েছে বিদ্যুৎ, এছাড়াও অনেক সম্পদ যা এক্সেস উন্নত করতেও সাহায্য করতে পারে ।
নবায়নযোগ্য শক্তির অসুবিধা
নবায়নযোগ্য শক্তির যেমন সুবিধা রয়েছে ঠিক তেমনি কিছু অসুবিধা রয়েছে । নিচে কিছু নবায়নযোগ্য শক্তির অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করা হলো।
- পরিবেশগত প্রভাব
- প্রযুক্তিগত অসুবিধা
- সরবরাহের অনিশ্চয়তা
- খরচ
- অবকাঠামগত অসুবিধা
- সঞ্চয়ের অসুবিধা
১। পরিবেশগত প্রভাব
কিছু নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস যেমন বায়ু শক্তি আরও অনেক শক্তি রয়েছে যেগুলো পরিবেশের উপর প্রভাব ফেলতে পারে যেমন পাখি হত্যা বা কোন প্রাণীকে হত্যা করা ইত্যাদি ।
২। প্রযুক্তিগত প্রভাব
নবায়নযোগ্য শক্তির কিছু উৎস এখনো উন্নয়ন সাধন হয়নি এজন্য দক্ষ লোকজনদের দ্বারা আরো উন্নত গবেষণার মাধ্যমে এ নবায়নযোগ্য শক্তির উন্নয়ন প্রয়োজন ।
৩। সরবরাহের অনিশ্চিত
নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো সাধারণত প্রকৃতির উপর নির্ভর হয়ে থাকে । অনেক সময় তারা বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে অক্ষম হয়ে যায় ।
৪। খরচের ক্ষেত্রে প্রভাব
নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো শক্তির উৎস যেমন জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় বেশি ব্যয়বহুল হয়ে থাকে ।
৫। অবকাঠামো সুবিধা
অনেক সময় নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো ক্ষেত্রে নতুন করে অবকাঠামো প্রয়োজন হয় যেমন টারবাইন যন্ত্র এবং সৌর প্যানেল ।
৬। সঞ্জয় এর অসুবিধা
নবায়নযোগ্য শক্তির উৎসগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের উৎপাদনের জন্য নিয়মিত সূর্য বা বাতাসের প্রয়োজন হয় তাই অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সঞ্চয় করার জন্য নতুন ব্যবস্থার প্রয়োজন হতে পারে ।
এই পোষ্টটি সম্পর্কে লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি বুঝতে পেরেছেন নবায়নযোগ্য শক্তি কি? অর্থাৎ নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস, নবায়নযোগ্য শক্তির সুবিধা-অসুবিধা এবং এমনকি অনবায়নযোগ্য শক্তি নিয়েও আলোচনা করা হয়েছে ।
আর আজকের পোস্টটি যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন । কেননা আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত তথ্য ও জ্ঞানমূলক পোস্ট করে থাকি । এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ । আল্লাহ হাফেজ।
মর্ডান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url