যেকোনো ধর্মের ব্যক্তির জন্য জীবন থেকে মানসিক শান্তি ফিরে পাওয়ার উপায় 2024
প্রিয় পাঠক আপনি যে ধর্মের হয়ে থাকুক না কেন ? আপনি যদি আপনার মানসিক শান্তি ফিরে পেতে চান ? তাহলে আপনার জন্য আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি । বর্তমানে প্রত্যেক ব্যক্তি শত ব্যস্ততার জীবন থেকে , বিভিন্ন কারণে সে তার জীবন থেকে মানসিক শান্তি হারিয়ে ফেলে।
প্রত্যেক ব্যক্তির সুস্থতার জন্য মানসিক শান্তি থাকা অপরিহার্য । তাই আপনি আপনার প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইলে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন । তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক ।
ভূমিকা
মানসিক শান্তি হলো কোন ব্যক্তির অভ্যন্তরে অর্থাৎ মনের মধ্যে যদি সুখ আর শান্তি এই দুইটা জিনিস বিরাজ করে , তখন তাকে মানসিক শান্তি বলে । বর্তমান বিশ্বে মানসিক শান্তি খুঁজে পাওয়া সবথেকে বড় একটি চ্যালেঞ্জিং ।
প্রত্যেক ব্যক্তি চাই মানসিক শান্তি পেতে । যখন কোন ব্যক্তির মধ্যে মানসিক শান্তি থাকে তখন সে ব্যক্তি তার জীবনকে আরও সম্পূর্ণরূপে বা সুন্দর ভাবে উপভোগ করতে পারে ।
এবং তার চারপাশের সৌন্দর্যের প্রশংসা করতে পারে । প্রত্যেক ব্যক্তির উচিত নিজের মনকে সুস্থ রাখার জন্য অর্থাৎ নিজের অভ্যন্তরে মানসিক শান্তি লাভের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
মানসিক শান্তি হারানোর কারণ ২০২৪
প্রকৃত অর্থে ভেবে দেখলে আমরা নিজেরাই নিজেদের মানসিক শান্তি হারানোর একমাত্র কারণ অর্থাৎ আমরা আমাদের জীবনে বা প্রতিদিন এমন কিছু কাজ করে থাকি যার কারণে আমাদের মধ্যে থেকে মানুষের শান্তিটা হারিয়ে যায় । তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সে কারণগুলো কি ।
- নিজের জীবনের অপ্রাপ্তি গুলোকে গ্রহণ না করা
- লোকে কি ভাববে
- সহজ কাজকে আগে করা - কঠিন কাজ দেখে ভয় পাওয়া
- নিজের যত্ন না নেওয়া
নিজের জীবনের অপ্রাপ্তি গুলোকে গ্রহণ না করা
সবার জীবনেই সমস্ত চাওয়া পাওয়া পূরণ হয় না , যার কারণে প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনে কিছু অপ্রাপ্তি থেকে যায় , আর এই অপ্রাপ্তি চাওয়া গুলোকে মেনে না নিলে
কিন্তু সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে যে মানুষ না পাওয়াটাকেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয় । যার ফলে তার মধ্যে হতাশা, অবসাদ, মানসিক অশান্তি ইত্যাদি এগুলো খুব সহজেই তার জীবনকে গ্রাস করে ফেলে । যার ফলে আপনি আপনার মানসিক শান্তিটা হারিয়ে ফেলবেন ।
অর্থাৎ আমাদের জীবনে যে সমস্থ ঘটনা ঘটে , সব কিছুই খারাপ হয় না অবশ্যই কিছু ভালো ঘটনা ও আমাদের জিবনে ও ঘটে থাকে সে সমস্ত ভালো দিকের কথা মনে করা অর্থাৎ জীবনে ঘটে যাওয়া ভালো কিছু নিয়ে সন্তুষ্ট থাকা , যার ফলে ভেতরের অর্ধেক অশান্তি দূর হয়ে যায়
লোকে কি ভাববে
বর্ধমানের মানসিক শান্তি হারানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে লোকে কি ভাববে । কেননা অনেক সময় দেখা যায় যে প্রকৃতপক্ষে মানুষ আপনাকে নিয়ে তেমন কিছুই ভাবেনি কিন্তু আপনি আগেই ভেবে বসে আছেন যে মানুষ আপনাকে নিয়ে কি ভাববে ।
আর এই ধারণাটা থাকার কারণে মনের মধ্যে একটি অশান্তির সৃষ্টি হয় , মনের ওপর চাপ পড়ে অবশেষে এটি অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় । অর্থাৎ জীবনে এগিয়ে যেতে হলে লোকে কি ভাববে এই জিনিসটা আপনার মাথা থেকে বের করে ফেলতে হবে ।
তাহলে আপনি আপনার নিজের প্রতি আস্থা বাড়বে ভরসা তৈরি হবে আর এটাই আপনাকে সামনে এগিয়ে নিতে সাহায্য করবে ।
কঠিন কাজ দেখে ভয় পাওয়া , সহজ কাজকে আগে করা
জীবন চলার পথে আপনাকে হয়তো অনেকেই এই পরামর্শটা দিয়ে থাকবে যে সহজ কাজ দিয়ে দিন শুরু করা অর্থাৎ সহজ কাজটি আগে করা ।
কিন্তু আপনার সব থেকে উত্তম হবে কঠিন কাজ দিয়ে দিন শুরু করা কঠিন কাজটিকে আগে করা ।
কারণ কঠিন কাজটি আপনি যদি সাহসের সঙ্গে সম্পন্ন করতে পারেন তাহলে আপনার ওপর থেকে বিশাল একটি চাপ নেমে যাবে । যার ফলে আপনার মানসিক শান্তি ফিরে আসবে ।
নিজের যত্ন না নেওয়া
নিজেই নিজের খেয়াল রাখুন নিজেকে সময় দিন , কেননা আপনি যদি নিজের যত্ন না নেন তাহলে আপনার কোন কিছুতেই মন বসবে না । অন্যভাবে বলা যায় যে শরীর এবং মনের মধ্যে একটি আলাদা রকম সম্পর্ক রয়েছে একটি অন্যটির ওপর নির্ভরশীল ।
যখনই আপনার শরীর সুস্থ থাকবে তখনই আপনার মন ভালো থাকবে । তাছাড়া শরীর যদি আপনার অসুস্থ থাকে তাহলে আপনাকে কোন কিছুই ভালো লাগবে না যার ফলে আপনি মানসিক শান্তি হারিয়ে ফেলবেন ।
আবার নিজের প্রতিটা কাজকর্মের অন্য কেউ খেয়াল রাখলো কি রাখল না এগুলো না ভাবা । তাহলে এটি আপনাকে আপনার মানসিক শান্তি লাভের জন্য অনুপ্রেরণা দিবে ।
কি করলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় 2024
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে প্রত্যেক ব্যক্তি তার জীবনে সবকিছু পাই না , কিছু চাওয়া বা পাওয়া অপূর্ণই রয়ে যায় । কিন্তু সব থেকে বড় সমস্যা হচ্ছে যে মানুষ না পাওয়াটাকেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেয় । যার ফলে তার মধ্যে হতাশা, অবসাদ, মানসিক অশান্তি ইত্যাদি এগুলো খুব সহজেই তার জীবনকে গ্রাস করে ফেলে ।
এবং সর্বশেষে এগুলোর জন্যই প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের মধ্যে থেকে মানসিক শান্তি টা হারিয়ে ফেলে।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার বলেন, ‘কোন ব্যক্তির অভ্যন্তরের মানসিক শান্তি এটা নির্ভর করে সম্পূর্ণ নিজের ওপর।’
কারন প্রত্যেক ব্যক্তির তার জীবনে ঘটে যাওয়া কিছু ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দিক থাকে । কিন্তু আমরা যদি নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ে ভাবি তাহলে আমাদের মধ্যে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায় কিন্তু প্রকৃত অর্থে আমরা তা করি না ।
আমরা আমাদের জীবনে ঘটে যাওয়া নেতিবাচক দিকগুলো নিয়েই পড়ে থাকি যা আমাদের মানসিক শান্তি হারানোর অন্যতম কারণ । তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে জীবনের মানসিক শান্তি আসবে ।
- আল্লাহতালার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস
- নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত
- ধ্যানে
- নিয়মিত শরীর চর্চা করা
- নিজের পছন্দের কিছু ভাল কাজ করা
- প্রকৃতিতে সময় কাটানো
আল্লাহতালার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস
আল্লাহ তায়ালার প্রতি ভালোবাসা আল্লাহকে স্মরণ মানুষের মনকে প্রশান্তি দান করে । আল্লাহতালার প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস নিজেকে পূর্ণরূপে সমর্পণ করে দেওয়ার মাধ্যমেই হয়ে থাকে ।
আল্লাহ তায়ালা বলেন , আল্লাহ ইসলামের জন্য যার বক্ষ , উন্মুক্ত করে দিয়েছেন ফলে সে আল্লাহতালার দেওয়া রহমতের আলোতে এসে গেছে সুতরাং ধ্বংস সেই কঠিন প্রাণদের জন্য যারা আল্লাহর জিকির থেকে বিমুখ তারা নিশ্চয়ই বিভ্রান্তিতে নিপতিত (সুরা : আজ-জুমার , আয়াত নং ২২) ।
নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করা
নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াত করা মানসিক শান্তির অন্যতম কারণ । কেননা কোরআন তেলাওয়াত আল্লাহর পক্ষ থেকে নূর ।
ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যার ভিতরে কোরআনের কোন আলো নেই সে বিরান ঘরের মতো (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৯১৩)
কোরআন হচ্ছে সর্ব রোগের নিরাময়ের একমাত্র উপায় , হোক না সেটা অন্তরের রোগ কিংবা দেহের রোগ ।
অসংখ্য হাদিসে এবং আল্লাহ তা'আলা পবিত্র কোরআনেও বলেছেন যে , আল কোরআন বিভিন্ন ব্যাধির জন্য অব্যর্থ মহা ঔষধ এবং দৈহিক ব্যাধির জন্য উত্তম চিকিৎসা । এটি পাঠ করার ফলে শরীর এবং মন দুইটাই সুস্থ থাকে
ধ্যানে
নিজের মনকে শান্ত করার জন্য এবং অভ্যন্তরীণ শান্তি খুঁজে পাওয়ার জন্য ধ্যান একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পৃথিবী সৃষ্টির সেই প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ মানসিক শান্তি লাভের জন্য ধ্যান এবং যোগ ব্যায়ামকে অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হয় ।
কেননা ধ্যানের মাধ্যমে শরীরের সারা দিনের যে ক্লান্তি ভাব সেটি দূর হয়ে যায় । বর্ধমান সময়ে দেখা যায় যে প্রত্যেক ব্যক্তি তার জীবনকে নিয়ে অনেক ব্যস্ত আর এই ব্যস্ততার মধ্যে ঢুকে পড়েছে দুশ্চিন্তা । আর ধ্যান করার মাধ্যমে মেলে মানসিক প্রশান্তি ।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে নিয়মিত ধ্যান করতে পারলে মানসিক শান্তি ও স্বাস্থ্য ভালো থাকতে পারে এবং শরীর থেকে সমস্ত রকমের অবসাদ উৎকণ্ঠা ভয় দূর হয়ে যায় এবং নিজের প্রতি ফিরে আত্মবিশ্বাস । তাই মানসিক শান্তি লাভের জন্য অবশ্যই ধ্যান করা প্রয়োজন ।
নিয়মিত শরীর চর্চা করা
একজন ব্যক্তি সে তার মানসিক শান্তি লাভের জন্য শরীরচর্চা করাকে অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয়। কেননা শরীর এবং মন এই দুইটার সাথে একটি আলাদা রকম সম্পর্ক রয়েছে । আপনার শরীর সুস্থ থাকলেই আপনার মন সুস্থ থাকবে ।
আর শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য নিয়মিত শরীর চর্চা করা প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজন । তাই নিজেকে সুস্থ এবং নিজের মানসিক শান্তি লাভের জন্য শরীর চর্চা করা সকলের জন্যই আবশ্যক ।
নিজের পছন্দের কিছু ভাল কাজ করা
অবসর সময়ে নিজের মনকে অন্যদিকে কিছু পছন্দের কাজে ব্যস্ত রাখুন । যেমন কোরআন তেলাওয়াত করা , বিভিন্ন ধরনের বই পড়া , বাগান করা ইত্যাদি । এ সকল কাজে নিজেকে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট ব্যয় করুন ।
যার ফলে আপনার পছন্দের কাজ করার মাধ্যমে আপনি মানসিক অবসাদ কাটিয়ে মানসিক শান্তি ফিরে পাবেন । নিজের মনে বাড়তি চাপ না বাড়িয়ে মানসিক শান্তির জন্য কিছু আনন্দমূলক কাজ করা উত্তম।
প্রকৃতিতে সময় কাটানো
ব্যক্তির মানসিক শান্তি লাভের অন্যতম কারণ হিসেবে প্রকৃতিকে বিবেচনা করা হয় ।কেননা প্রকৃতি একটি অপরূপ সৌন্দর্যের অধিকারী ।
প্রকৃতিতে বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান বা প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য ভ্রমণ করার মাধ্যমে প্রত্যেক ব্যক্তির মনের মধ্যে একটি আলাদা রকম শান্তি কাজ করে । এজন্য প্রকৃতিকে মানসিক শান্তির অন্যতম কারণ হিসেবে ধরা হয় ।
কোথায় গেলে মানসিক শান্তি পাবো মুসলিম 2024
প্রিয় পাঠক আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তাহলে আপনার সর্বোত্তম শান্তির জায়গা হচ্ছে নামাজ । কেননা নামাজের মাধ্যমে মানসিক শান্তি লাভ করা যায় । আল্লাহতালা চাইলে সমস্ত দুশ্চিন্তা পেরেশানি নিমিষেই দূর করে দিতে পারেন ।
তিনি প্রকৃতপক্ষে এসব দূর করে থাকেন যদি বান্দার ধারণা আল্লাহতালার প্রতি পাকাপোক্ত হয় , তার অন্তরে আল্লাহতালার ভয় থাকে এবং আল্লাহ তায়ালার খুশির জন্য সে সমস্ত কাজ করে থাকেন ।
আল্লাহ তালার প্রতি বিশ্বাস এবং সর্বদা তার বিধান মত চলা , আল্লাহ তায়ালা বলেন যে মুমিন অবস্থায় নেক আমল করবে সে পুরুষ হোক বা নারী , আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করবো ।
এবং তারা যা করত তার তুলনায় আমি অবশ্যই তাদেরকে অধিক উত্তম প্রতিদান দিব । তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দান করব । (সুরা : নাহল, আয়াত নং ৯৭)
একজন মুসলিম ব্যক্তি যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন তার দুনিয়াবী সকল টেনশন দূর হয়ে যায় , আর আল্লাহতালার উপর বিশ্বাস রাখলে মানুষ সবকিছু বা সকল প্রকারের বিভিন্ন খারাপ চিন্তাভাবনা তাদের মন থেকে দূর হয়ে যায় ।
আর কোন ব্যক্তি যদি আল্লাহতালাকে একনিষ্ঠ ভাবে ভালোবাসে তাহলে উক্ত ব্যক্তি মসজিদে গেলেই , একটি আলাদা রকম শান্তি অনুভব করবেন যে শান্তিটা তিনি কোথাও পাবে না । আপনার মন থেকে সকল খারাপ চিন্তা ভাবনা ও মানসিক টেনশন এগুলো নিমিষের মাধ্যমেই ভুলে যাবেন ।
আর একজন ব্যক্তি তার মানসিক শান্তি হারানোর অন্যতম কারণ হচ্ছে খারাপ চিন্তা বা মানসিক টেনশন ইত্যাদি । নামাজের মাধ্যমে ব্যক্তির মন পবিত্র এবং শান্ত থাকে যার ফলে ব্যক্তির শারীরিক কর্মদক্ষতা বেড়ে যায় যা ব্যক্তির শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার বহিঃপ্রকাশ ।
ব্যক্তির জীবনে শৃঙ্খলা ফিরে আসে এবং নামাজী ব্যক্তি বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক বা খারাপ কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকেন । জীবনের সমস্ত হতাশা , অশান্তি , অস্থিরতা নিকট থেকে বেরিয়ে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় ।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার মাধ্যমে একজন মুসলিম ব্যক্তির শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তি এনে দিতে পারে ।
মানসিক রোগের শান্তির ওষুধ
বর্ধমান সমাজের অনেকের ধারণা অর্থাৎ অনেকে বিশ্বাস করে থাকেন যে মানসিক রোগের উপসর্গগুলোকে জাদু-টোনা , তাবিজ , জিন-ভূতের আসর বা আলগা বাতাসের প্রভাব এর ফলে হয়ে থাকে । যার ফলে অনেকেই কবিরাজের কাছে গিয়ে থাকেন ।
আবার অনেকেই বিশ্বাস করে থাকেন যে মানসিক রোগের উপসর্গগুলো বয়সের দোষ , বিয়ের জন্য তালবাহানা ইত্যাদি । প্রকৃতপক্ষে এগুলো কুসংস্কার ছাড়া আর কিছুই নয় ।
আবার বর্তমান সমাজের বড় একটি অংশ মানসিক রোগের ঔষধ নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তিতে চিকিৎসা করাই না ।
জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের এবং ঢাকা মানসিক রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মুনতাসির মারুফ বলেছেন বর্তমানে অনেক মানুষ রয়েছে যারা মানসিক রোগের ওষুধ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক ধারণা রয়েছে
যেমন ব্রেনের ক্ষতি , ব্রেন নষ্ট হয়ে যায় , মস্তিষ্ক আর কখনোই স্বাভাবিক কাজ করতে পারে না ইত্যাদি । কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মানসিক রোগের ওষুধের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই । আবিষ্কৃত যে কোন কার্যকর ওষুধে সম্পূর্ণরূপে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত নয় ।
এমনকি আমরা নিয়মিত যে প্যারাসিটামল আর গ্যাসের ওষুধ সেবন করি সেগুলো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বিহীন নয় । আমাদের সকলকে মনে রাখতে হবে যে একটি ওষুধের সব ক্ষেত্রে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয় না ।
মানসিক রোগের ওষুধ হিসাবে অনেকেই সাইকোথেরাপি অথবা কাউন্সেলিংএর মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ করে দেওয়ার দাবি জানাই । মানসিক রোগের ধরন অনুযায়ী সাইকোথেরাপির পাশাপাশি আরো অন্যান্য চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে ।
কোন ব্যক্তি চাইলে দুইটার মধ্যে যে কোন একটি নিতে পারে । এবং সর্বশেষে প্রত্যেক ব্যক্তিকে মনে রাখতে হবে যে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা বন্ধ করতে হবে
কোথায় গেলে মানসিক শান্তি পাবো হিন্দু
উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটা বোঝা যায় যে একজন মুমিন ব্যক্তি অর্থাৎ মুসলিম ব্যক্তির জন্য কি করলে , কোথায় গেলে মানুষের শান্তি পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
কিন্তু এখন অনেক হিন্দু ধর্মীয় ব্যক্তিদের মনে প্রশ্ন হতে পারে যে নামাজ পড়া , মসজিদে যাওয়া , এগুলো তো আমাদের ধর্মের নয় । তাহলে আমরা কিভাবে মানসিক শান্তি পাব ?
অবশ্যই আপনিও মানসিক শান্তি পাবেন । আপনি যে ধর্মেই হয়ে থাকুন না কেন ধর্ম অনুসারে চলবেন এবং উপরে কিভাবে আমরা নিজেরা নিজের মানসিক শান্তি লাভ করতে পারব সে সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে ।
তাই আপনি যে ধর্মেই হোন না কেন ধর্মের নিয়ম-নীতি ছাড়া বাকি সমস্ত কিছু অনুসরণ করবেন তাহলে অবশ্যই আপনার জীবনে শান্তি ফিরে আসবে । হিন্দু ধর্মীয় অনুসারে শান্তি লাভের জন্য কিছু মন্ত্র রয়েছে যেগুলো পাঠ করলে আপনি মনের মধ্যে একটি আলাদা রকম শান্তি অনুভব করতে পারবেন ।
তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক সে মন্ত্র গুলো কি কি । অনেক সময় অনেক ব্যস্ততা অত্যাধিক চিন্তা-ভাবনা মনকে প্রভাবিত করে তুললে তাকে শান্ত করার সৃষ্ট উপায় হল মন্ত্র জপ করা । এমন অনেক মন্ত্র আছে যেগুলো জব করার মাধ্যমে আপনি মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং মনের মধ্যে একটি আলাদা রকম শান্তি অনুভব করতে পারবেন ।
বিভিন্ন ধরনের চিন্তা এবং হতাশা থেকে মুক্তির মন্ত্র
ওম নমঃ শিবায়
হিন্দু ধর্মস্বাস্থ্যের মতে শিবের এই মন্ত্রটির জপ করার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার মনের মধ্যে থেকে বিভিন্ন ধরনের চিন্তা ও হতাশা দূর হয়ে যায় এবং মনের মধ্যে শান্তি ও শীতলতা ফিরে আসে ।
রুদ্রাক্ষের মালা শিবলিঙ্গের জল ও বেল পাতা নিবেদনের সময় এই মন্ত্রটি জপ করুন । আর এই মন্ত্রটিকে মহামন্ত্র হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে ।
বিভিন্ন ধরনের অশান্তি দূর করে শান্তিদায়ক মন্ত্র
রাম রাম রাম
হিন্দু ধর্মের স্বাস্থ্যের মতে বজরংবলীও এই রাম মন্ত্রটি জব করতেন । এই মন্ত্রটি জব করার মাধ্যমে মনের মধ্যে শান্তি লাভ করা যায় । বিভিন্ন ধরনের অশান্তি দূর করে শান্তি ফিরিয়ে আনা যায় এই মন্ত্রের মাধ্যমে।এর প্রভাবে নেতিবাচক প্রভাব সমাপ্ত হয় ।
জীবনে মানসিক শান্তির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আর কিচ্ছু নেই
এই পৃথিবীতে প্রত্যেক ব্যক্তি চাই মানসিক শান্তি এবং সুস্থতার মাধ্যমে জীবন যাপন করতে । প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিত্য নিয়ম অনুযায়ী অক্লান্ত পরিশ্রমে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকেন । তার একমাত্র কারণ হচ্ছে ভালো থাকার জন্য
অর্থাৎ মানসিক শান্তি ও সুস্থতার মাধ্যমে জীবনকে যেন সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারে । সাধারণত আমরা নিজেরাই নিজের মানসিক শান্তি হারানোর অন্যতম কারণ । প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের অজান্তেই সে তার মানসিক শান্তি হারিয়ে ফেলে।
একজন ব্যক্তি চাইলেই সে যেমন মানসিক শান্তি হারিয়ে ফেলতে পারে তেমনি তার মানুষের সাথে ফিরে আনতে শুধুমাত্র সেই পারি।
সুতরাং বলা যায় যে প্রত্যেক ব্যক্তির জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মানসিক শান্তি এছাড়া আর কিছুই নেই।
লেখকের শেষ মন্তব্য
প্রিয় পাঠক আশা করি আমাদের আর্টিকেলটি পড়ে আপনি বুঝতে পেরেছেন যে , কি করলে , কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় ।
এরপরও যদি কোন প্রশ্নের উত্তর জানতে চান তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন । আর যদি কোন ভুল ত্রুটি পরিলক্ষিত হয় তাহলে অবশ্যই সঠিক উত্তর বা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবেন ধন্যবাদ ।
মর্ডান আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url